চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও কমেছে। তবে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে ভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ লাখ।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তবে সোমবারের মতো মঙ্গলবারও দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইরান। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২১ কোটি ৭৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৫ লাখ ২২ হাজার।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ২৭৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যু কমেছে প্রায় দেড়শ। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৫ লাখ ২২ হাজার ৯৪০ জনে।
এছাড়া, একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ১০ হাজার ৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫৯ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৭৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮০৪ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনার সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৬৫ জন এবং মারা গেছেন ৫৫৩ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩১ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৩৭৭ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে সোমবারের মতো মঙ্গলবারও বিশ্বে দৈনিক প্রাণহানির শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ৭৯২ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ৩২৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৯ লাখ ১ হাজার ১৫২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪২৯ জনের।
বিশ্বে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরান। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৬৯ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৭৮০ জন। করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ৭৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ১ লাখ ৭ হাজার ১৫১ জন মারা গেছেন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৬৮ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৪৩৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৪৯১ জনের।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩১৩ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৪৬৬ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৭ লাখ ৫২ হাজার ২৮১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৬৪৩ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০৫ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ২৫১ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ২৭ লাখ ৬৭ হাজার ২৮০ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯২ জন।
উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে দৈনিক প্রাণহানির সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ২৫৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ৮৩৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৩ লাখ ৩৫ হাজার ৭০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৫ জনের।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬৭ লাখ ৪৬ হাজার ২৮৩ জন, যুক্তরাজ্যে ৬৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫০ জন, ইতালিতে ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৪৯৯ জন, তুরস্কে ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ৪৩৮ জন, স্পেনে ৪৮ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৮ জন এবং জার্মানিতে ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১৪ হাজার ৩০৮ জন, যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩২ হাজার ৪৮৫ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৯ হাজার ১৪৬ জন, তুরস্কে ৫৬ হাজার ৪৫৮ জন, স্পেনে ৮৪ হাজার ১৪৬ জন এবং জার্মানিতে ৯২ হাজার ৬৭১ জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।