রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
বিদেশ সফরে সরকারের ১০ কর্মকর্তা, চলছে তীব্র বিতর্ক আরপিও সংশোধনীর বিরোধিতা করে সিইসিকে চিঠি বিএনপির নারায়ণগঞ্জে ডাইং কারখানায় বিস্ফোরণ : দগ্ধ ৬ জন জাতীয় বার্নে শহরের বিভিন্নস্থানে বাবুল আহমেদের পক্ষে লিফলেট বিতরন মদনপুরে শহীদ জিয়া ফুটবল টুর্নামেন্ট এর উদ্বোধন খেলায় ওসি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে ফুল দিয়ে বরণ আওয়ামীলীগ নেতাদের সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের মান উন্নয়নে ও কল্যাণে কাজ করছেন সেলিম রেজা ; সহযোগিতার আহ্বান সিদ্ধিরগঞ্জ ইসলাম নগরে সমাজকর্মী সাকিলা’র উদ্যোগে উই ফর ইউ’র ফ্রি রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত ১৪ মাসে চার্জশিট হয়নি একটি মামলারও, ভোগান্তিতে বিচারপ্রার্থীরা ভয়াবহ ‘সুনামি’র কবলে ইসরাইল! ইতিহাস গড়ার প্রস্তুতি যেভাবে নিতে চলেছেন মুশফিক

বিদেশ সফরে সরকারের ১০ কর্মকর্তা, চলছে তীব্র বিতর্ক

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১.৪৮ পিএম
  • ১ বার পড়া হয়েছে

কিশোরগঞ্জের ১০ উপজেলার ‘নদীতীর সুরক্ষা ও খাল খনন’ প্রকল্পের প্রশিক্ষণ নিতে নেদারল্যান্ডসে গেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের ১০ কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে সাত জনই নন-টেকনিক্যাল কর্মকর্তা। সংশ্লিষ্ট মহলে বলা হচ্ছে, সরকারি অর্থে ইউরোপ সফর হলেও এতে প্রকল্পের কোনো বাস্তব সুফল মিলবে না।

জানা গেছে, ২০ অক্টোবর থেকে ১০ দিনের এ সফর চলছে। প্রশিক্ষণের বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ অনুবিভাগের বাজেট অধিশাখা থেকে গত ২৪ জুলাই উপ-সচিব মোহাম্মদ জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বিদেশ সফর সীমিত করা হয়। তারপরও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়েরই একজন প্রভাবশালীর তদবিরে এই সফরের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণের নামে সরকারি টাকা খরচ হলেও পাউবোর কোনো কাজে এসব কর্মকর্তা ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে মনে হয় না। প্রশিক্ষণার্থীর তালিকায় ১০ জনের মধ্যে সাতজনই নন-টেকনিক্যাল হওয়ায় প্রশিক্ষণ প্রস্তাব প্রথমে অনুমোদন দেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পরই ওই প্রভাবশালী সুপারিশ করেন।’

জানতে চাইলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘অভিযোগটি সঠিক নয়। নেদারল্যান্ডস দূতাবাস অনেক যাচাই-বাছাই করে মূল কম্পোনেন্ট প্রশিক্ষণের এই তালিকা করেছে। আমার কাছেও বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি হয়েছিল। পরে জানতে পারলাম তারা (নেদারল্যান্ডস দূতাবাস) নিজেরাই আয়োজন করেছে। এখানে অনেক পলিসির বিষয় আছে। আমি কাউকে মনোনয়ন দেইনি। এখন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসকে জিজ্ঞেস করেন তারা কেন এই আয়োজন করেছে!’

তবে প্রকল্পের পরিচালক পাউবোর ময়মনসিংহের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার যুগান্তরকে বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের ১০ উপজেলায় নদীতীর সুরক্ষা ও খাল খনন কাজ সার্ভে বিষয়ে প্রকল্পের ব্যয়ে প্রশিক্ষণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল। নেদারল্যান্ডসে এই প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৭০ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের অধীনেই গত ২০ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি আমরা। এখানে নেদারল্যান্ডস সরকারের কোনো ব্যয় নেই। প্রশিক্ষণার্থী কর্মকর্তাদের তালিকাও পাউবো ও মন্ত্রণালয় করেছে।’

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দেওয়া তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে প্ল্যানিং কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, তাকে (পানিসম্পদ সচিব) হয়তো মূল বিষয় অবহিত করা হয়নি।

তিনি বলেন, যে কর্মকর্তা প্রকল্প তৈরি করেন তিনিই বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফরের প্রস্তাব করেন। সেখানে দেশ বিবেচনায় টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। অনুমোদনের পর এই সফরের আয়োজন করা হয়। যে দেশে ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয় সেই দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিষয়ে সে দেশের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের সহযোগিতা নেওয়া হয়। দূতাবাসকে অবহিত করা না হলে আবার ভিসা জটিলতাও হয়।

তিনি বলেন, নেদারল্যান্ডস সরকার টাকা খরচ করবে দূরে থাক, উলটো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য নেদারল্যান্ডসে সরকারি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। ডাচ প্রশিক্ষকরা সেখানে টাকা পাবেন। এখন যদি নন-টেকনিক্যাল কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে থাকেন তাহলে এই টাকা খরচ পুরোটাই অপচয়। একজন সুপিরিয়র কর্মকর্তা সেখানে যেতে পারেন। তাই বলে তিন যুগ্ম সচিবসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের যাওয়াটা সঠিক হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে নেদারল্যান্ডসে গেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনজন যুগ্ম সচিব ও একজন উপসচিব। তারা হলেন যুগ্ম সচিব (ডিজি ওয়ারপো) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুল্লাহ আল আরিফ ও পাউবোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোল্লাহ মিজানুর রহমান। এছাড়া এই তালিকায় আছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুজিত হাওলাদার, প্ল্যানিং ডিভিশনের ডেপুটি চিফ বাবুলাল রবিদাস ও প্ল্যানিং ডিভিশনের সিনিয়র এসিস্ট্যান্ট চিফ জয়া মারিয়া। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যে চার কর্মকর্তা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তারা হলেন পাউবোর ময়মনসিংহ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার, পাউবো কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, পাউবোর ঢাকা ডিভিশন সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়রা মেহজাবিন ও পাউবোর ভৈরব সাব-ডিভিশন অফিসের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) মোহাম্মদ আতিকুল গনি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলার ১০টি উপজেলায় নদীতীর সুরক্ষা কাজ, ঢেউ প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খালের পুনঃখনন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পে ৬৫৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সুপারিশে ২০২২ সালে প্রকল্পটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে একনেকে পাশ হয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারিত থাকলেও প্রকল্পটির বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ১৬ শতাংশ। বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ২১টি স্থানে সাড়ে ১৭ কিলোমিটার নদীতীর প্রতিরক্ষা কাজে ব্যয় ধরা হয় ৫৭৪ কোটি টাকা। চলমান এ কাজে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে ২৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি ৪ শতাংশ।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চার কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে গেছেন এ বিষয়ে আমি অবগত।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort