বিএনপি নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন হয়ে যাবে। সেটা নিয়ে ভাবার কিছু নেই বলে মনে করছেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। তারা জানান, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা রুখবে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা এসব কথা বলেন।
বিএনপি কেন নির্বাচনের বিরুদ্ধে তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সভায় আমির হোসেন আমু বলেন, সরকারে ছিল কে? ফখরুদ্দীনের পরিচয় ছিল কী? জিয়াউর রহমান কর্তৃক নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিল কে? জেনারেল মতিন। পরিচয় কী? খালেদা জিয়ার সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান। মঈন উদ্দিন কে? ছয় জনকে বাদ দিয়ে খালেদা জিয়া যাকে সেনাবাহিনী প্রধান করেছিলেন। সেদিন যে লোকগুলোকে নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে তারা ছিল বিএনপিপন্থি।
১৪ দলের অন্যতম নেতা জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, একাত্তরের যুদ্ধ কয়েকটি রাজনৈতিক সমাধান করেছিল– সংবিধানের চার নীতি, মুক্তিযুদ্ধের চার নীতি, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের নাম, জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা– এসব মীমাংসিত ঘটনা। পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীরা ছয়টি জঘন্য অপরাধ করেছে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, একাত্তরের রাজাকারদের ভাগাড় (ডাস্টবিন) থেকে টেনে নিয়েছে। একাত্তরের সামরিক শাসনের ঔরসে জন্মলাভ করা বিএনপি ও একাত্তরের রাজাকার জামায়াত– এই দুই রাজাকারের সরকার গঠনের প্রস্তাব মহাবিপদ ও অশনি সংকেত। তাদের এক চুল ছাড় দেব না।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ৯ মাস পর জাতীয় নির্বাচন, তা নিয়ে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে স্বাধীন নির্বাচন দেখতে চায়, আমরাও দেখতে চাই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র একাত্তরে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে অস্ত্র দিয়ে রক্তের হোলিখেলা করেছে।
জাতীয় পার্টি- জেপি সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র মেরামত করতে ১০, ২৭ দফা দিচ্ছে। কে মেরামত করবে, সে তো লন্ডনে। লন্ডন থেকে আবার ষড়যন্ত্র চলছে, সদা সতর্ক থাকতে হবে। সরকারের বদনাম করার জন্য দুর্নীতিতে লিপ্ত রয়েছে অনেকে, তাদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাৎ হোসেন বলেন, দেশকে তারা অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, তাদের সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। চোরাগোপ্তা পথে কিছু হবে না, লড়াই হবে রাজপথে।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি – ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, সারা বাংলাদেশে ১৪ দলীয় কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেব। ১৪ দলকে সুসংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করতে হবে। সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, কোনো অসাংবিধানিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন করবে। কমিশন স্বাধীনভাবে এ নির্বাচন পরিচালনা করবে।