আবারও অস্থির হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে সবজি, ডিম ও মুরগির দাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারে এসে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
নগরীর বাজার গুলোতে আবারও বেড়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। তিন দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে ডজন প্রতি ডিম ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে মুরগির মাংস ও সবজিও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো অসাধু ব্যবসায়ীদের অপকৌশল। বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়ার আদতে কোনো যুক্তি নেই। এটা শুধুই ব্যবসায়ীদের কারসাজি।
শুক্রবার নগরীর দিগুরবাজার, কালীরবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, খুচরায় প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। ডজন নিলে ১৪৫-১৫০ টাকা। যদিও কিছু কিছু বাজারে ডজনে ৫-১০ টাকা কম নিতে দেখা গেছে। তবে সে সংখ্যা খুব কম।
এছাড়া, বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে নগরীর সবজির বাজারগুলোতে। সবজি ভেদে দাম ১৫- ২০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন দিগুবাবুর বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা। বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বেগুন ৫০, কচুর লতি ৭০, মুলা ৫০, শসা ৭০, উস্তে ৮০, করলা ৮০, ঢেঁড়স ৫০, পটল ৪০, টমেটো ১২০, সিম ১৬০, কচুমুখি ৬০, পেঁপে ৩০, চিচিঙ্গা ৬০, বরবটি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে লাউ ৬০, বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ টাকা ও চাল কুমড়া ৪০ টাকা পিস হিসেবে এবং মিষ্টি কুমড়ার ফালি ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর কাঁচকলা ৩০ ও লেবু ২৫ থেকে ৩০ টাকা হালি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে শুধু সবজি নয়, বাজারে দেখা গেছে চালের দামও বেশি। মোটা-সরু সব চালের দামই বেড়েছে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দুই টাকা বেড়ে স্বর্ণা ৫০ থেকে ৫২ টাকা ও বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। অথচ এর আগে প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ও বিআর-২৮ এর দাম ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। এ ছাড়া আগের চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মিনিকেট ও নাজিরশাইল। এসব চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮৪ টাকায়।
দিগুর বাজারে আসা বেসরকারি চাকুরীজীবি দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাসিক বেতনের সঙ্গে বাজারের হিসাব মিলে না। তাই তো এখন মানসিকভাবে মেনেই নিয়েছি বাজারে গেলে বেশি টাকায় অল্প সদাই নিয়ে ফিরতে হবে। খেতে বসলে কম কম খেতে হবে।
কালির বাজারে আসা এ ক্রেতা নারী গার্মেন্ট কর্মী রেহেনা বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা ফেরেশতা। শুধু পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য বৃষ্টি বা অন্য কোনো একটা সুযোগ পেলেই মানুষের গলা কাটে। সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটি আছে তাদের মতো ঘুমিয়ে!
এদিকে মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মুরগির দাম বাড়তি রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। তা আজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। তবে বাজারে মুরগির দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে গরুর মাংসের দাম।
গরুর কলিজাও বিক্রি হচ্ছে মাংসের দামেই ৬৮০ টাকা কেজি। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা কেজি। আর ব্রয়লার ১৮০, লেয়ার মুরগি (লাল) ২৮০, সোনালি বা পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি দরে।