ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দাঁড়িয়ে ফের অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সরব হলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুই দিনের সংক্ষিপ্ত পশ্চিমবঙ্গ সফরে গত শনিবার রাতে কলকাতায় আসেন তিনি। রোববার পেট্রাপোল সীমান্তে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট, যাত্রী টার্মিনাল ও মৈত্রীদ্বার উদ্বোধন করেন। ওই অনুষ্ঠানেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমান্তে অনুপ্রবেশ নিয়ে সরব হন অমিত। তিনি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলায় পরিবর্তন আনুন। অনুপ্রবেশ রুখবে বিজেপি।
তিনি আরও জানান, অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্তের সুরক্ষা আরও বাড়ানো হচ্ছে। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬ কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচন। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলায় এসে ফের রাজনৈতিক পরিবর্তনের ডাক দিলেন অমিত।
প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অমিত শাহ দাবি করেন, ‘আচ্ছে দিন’ আর বেশি দূরে নেই। ২০২৬ থেকেই শুরু হয়ে যাবে আচ্ছে দিন। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না বাংলার মানুষ। কিন্তু আক্ষেপ করবেন না। ২০২৬ সালের ভোটে বিজেপি সরকার আসবে।
অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৫ থেকে ৬ হাজার লোক এখানে আসেন চিকিৎসা করাতে। কিন্তু অবৈধ আসা-যাওয়া হলে বাংলার শান্তি বিঘ্নিত হয়। ২৬ সালে পরিবর্তন করুন। এই অনুপ্রবেশ আটকে দেব। বাংলায় শান্তি ফিরবে অনুপ্রবেশ বন্ধ হলেই। বাংলায় অশান্তির মূলে রয়েছে এই অনুপ্রবেশ। আর সেটা করতে পারে একমাত্র বিজেপিই।
এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগেরও জবাব দেন শাহ। বাংলার উন্নয়নে নরেন্দ্র মোদি বদ্ধপরিকর দাবি করে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। ইউপিএর জমানার সঙ্গে মোদির ১০ বছরে বাংলার জন্য বরাদ্দের হিসাব দেন। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, ইউপিএ সরকারে মন্ত্রিত্বে ছিল তৃণমূল সরকার। শাহ দাবি করেন, ইউপিএ জমানার থেকে মোদি সরকার বাংলাকে বেশি রুপি দিয়েছে। তিনি বলেন, ইউপিএ আমলের ১০ বছরে কেন্দ্র বাংলাকে দিয়েছিল ২ লাখ ৯ হাজার কোটি। কিন্তু ২০১৪ থেকে ২০২৪ এই ১০ বছরে মোদি সরকার বাংলাকে দিয়েছে ৭ লাখ ৭৪ হাজার কোটি রুপি। নরেন্দ্র মোদি সরকারের দেওয়া টাকা দুর্নীতিতেই চলে যায় বলে দাবি করেন অমিত।
অমিত শাহের পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ‘প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল’ উদ্বোধন উপলক্ষে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে দুই দেশের যাত্রীদের যাতায়াত ৭ ঘণ্টা বন্ধ রেখেছিল পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দুই পারের চেকপোস্টে শত শত যাত্রী আটকা পড়ে। তাদের মধ্যে জরুরি চিকিৎসাসেবী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী ছিলেন। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইমতিয়াজ আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।