‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে চীনের আগমন ভারতের স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। শনিবার ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের গুয়াহাটিতে এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বিপিন রাওয়াত বলেন, ‘প্রতিবেশী এই দুই দেশ চীনের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা পেয়েছে। বেইজিং দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত পা রাখার জায়গা খুঁজে পেতে শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপেও বিনিয়োগ করেছে।’
ভারতের এই চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বলেন, সম্প্রতি আমরা এই অঞ্চলে (দক্ষিণ এশিয়ায়) চীনের ভূ-কৌশলগত প্রতিযোগিতা এবং বিপুল বিনিয়োগ দেখতে পাচ্ছি। আর এটি করা হচ্ছে যাতে বেইজিংয়ের স্বার্থের প্রতি যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা যায়।
ভারতীয় এই সাবেক সেনা জেনারেল দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিতে ভারতের বিপদ দেখছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত অস্থিতিশীলতার এক ‘সর্বব্যাপী বিপদ’ আছে; যা ভারতের ‘আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং কৌশলগত গুরুত্বকে’ হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
‘চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতকে অবশ্যই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আরও বাড়াতে হবে’ বলে জানিয়েছেন তিনি। বিপিন রাওয়াত বলেন, আমাদের প্রতিবেশীদের বলতে হবে যে, আমরা এখানে স্থায়ী বন্ধু হিসেবে আছি, তাদের সাথে সমান শর্তে সম্পর্ক গড়েছি এবং আমরা সকল প্রতিবেশীকে উন্নয়নে সমান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি।
ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ‘ছায়া যুদ্ধ’ শুরু করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন সাবেক এই ভারতীয় সেনাপ্রধান। জম্মু এবং কাশ্মিরে যখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে, তখন আমাদের পশ্চিমের শত্রু সেখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। সেখানে কিছু নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা করে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে।
চীনের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনার বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত ও চীনের মধ্যে সন্দেহ ছিল; উত্তেজনা নিরসনে সময় লাগবে। সশস্ত্র বাহিনী এবং বাহিনীর ব্যবস্থাপনার ওপর জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে।
গত বছরের জুনে লাদাখের পূর্বাঞ্চলের গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা চলছে। লাদাখের ওই সংঘাতে ভারতের ২০ সৈন্য নিহত হয়। চীন বলছে, গালওয়ানের সেই সংঘাতে তাদের চারজন সৈন্যের প্রাণহানি ঘটেছে।