বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

বন্ধ ট্রেন চলাচল, দুর্ভোগে যাত্রীরা

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫, ১০.৫৫ এএম
  • ০ বার পড়া হয়েছে

সন্তান ও বয়স্ক বাবাকে নিয়ে রংপুরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কমলাপুর রেল স্টেশনের আসেন মাহমুদুল হাসান। যাত্রা পথে যেন ভোগান্তি না হয় তাই আগেই কেটে রেখেছিলেন টিকিট। কিন্তু রেল স্টেশনে এসে জানতে পারেন ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন বৃদ্ধ বাবা ও সন্তানকে নিয়ে। মাইকে বারবার টিকিট ফেরত নেওয়ার কথা ঘোষণা করে রেল কর্তৃপক্ষ। পরে কিছুটা অপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে টিকিটের টাকা ফেরত নিয়ে চলে যান তিনি।

তিনি জানান, বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে বাসে যাওয়া কষ্টকর হবে বলেই ট্রেনের যাওয়ার চিন্তা করেছি। কিন্তু এসে দেখি ট্রেন চলার কোনো সম্ভাবনা আছে বলে মনে হচ্ছে না।

শুধু তিনি নয়, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন রেলপথে চলাচলকারী প্রতিটি সাধারণ যাত্রী। অগ্রীম ট্রেনের টিকিট কাটা যাত্রীরা কর্মবিরতি সম্পর্কে না জানার ফলে তারা সকাল থেকে স্টেশনে এসে ভিড় করেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরতে হয়েছে বাড়িতে। অনেকে সরাসরি টিকিট কেটে গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এসেও যেতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ভোগান্তি ঠেলে সড়কপথে গন্তব্যে ছুটেন। অনেকেই আবার বাতিল হওয়া ট্রেন যাত্রার টিকিটের টাকা ফেরত নেন কাউন্টার থেকে। তবে স্টাফদের কর্মবিরতির বিষয়টি সম্পর্কে রেলওয়ে বিভাগ আগে থেকে না জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা।

রেল পরিষেবা বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে রুটগুলোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বিআরটিসি বাস চালু করে রেল মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ঢাকা রেলস্টেশন ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের কেনা ট্রেন টিকিট দিয়ে বিআরটিসি বাস ব্যবহার করতে পারবেন। একইভাবে, এই স্থানগুলো থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরাও একই পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন।

হাবিবুর নামের এক যাত্রী বলেন, ট্রেন বন্ধ থাকায় কর্তৃপক্ষ বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করেছে। তবে এটা একেবারে খারাপ হয়নি। এ ব্যবস্থা না করলে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যেত। দাবি আদায়ের বিষয়গুলো তাদের মতো করে ঠিকঠাক করে নেওয়া ভালো। তার জন্য যদিযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়, এটা খুবই কষ্টকর। আমাদের যদি আগে থেকেই মেসেজ দিতো তাহলে এতো ভোগান্তি হতো না। কারণ এত জিনিসপত্র নিয়ে এসেছি, এখন ট্রেন চলবে না, আমাদের কি কষ্ট হচ্ছে না? তারপরও বিআরটিসি সেবা দিচ্ছে তার জন্য ধন্যবাদ।

অন্য আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, রেলওয়ের কর্মীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকতেই পারে। কিন্তু ট্রেন বন্ধের বিষয়টি প্রত্যেক যাত্রীকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার দরকার ছিল। এর ফলে যাত্রীদের ভোগান্তিতে পাড়তে হয়েছে স্টেশনে এসে। এটা নিছক হয়রানি ছাড়া কিছু না। তাছাড়া বাসে যাত্রা নিরাপদ না এবং ভাড়া ও সময় দুটোই বেশি লাগে।

এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বাসের ওপর বাড়তি চাপ বেড়েছে। অধিকাংশ বাস মালিক বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাসের সংখ্যা বাড়িয়েছেন বাস মালিকরা। তবে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলা রুটে যাত্রীদের চেয়ে ভাড়া বেশি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তারপরও সবাই বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান। তাছাড়া অনেকে বাসের টিকিট সীমিত থাকায় যাত্রীরা সিএনজি, অটোরিকশা ও বিকল্প ব্যবস্থায় গন্তব্যের দিকে রওনা হন।

উল্লেখ্য, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। এ কারণে সারা দেশে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort