বন্দরে জনতা কর্তৃক ধুত চোর থানা থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং দায় এড়াতে এজাহার পরিবর্তনের ঘটনার অভিযোগ নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। থানা পুলিশের দায়িত্বে অবহেলাকেই দায়ী করছেন সচেতন মহল। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ বন্দরবাসী।
রবিবার (২৫ জুন) বন্দর থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষ থেকে আসামি পলায়ন এবং জোরপূর্বক এজাহার পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে।
লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বন্দর রেললাইন বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ইন্টারনেট ব্যাবসায়ীদের স্থাপিত অনু সুইচ, এমসি সহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি প্রতিনিয়ত চুরির ঘটনা ঘটছে।
রোববার (২৫ জুন) ভোর বেলায় ইন্টারনেট কানেকশনের সরঞ্জামাদি চুরি করার সময় স্থানীয় জনতা কর্তৃক সোনাকান্দা তেতুল তলার পারুল মিয়ার ছেলে রাজীব (৩৩) ও মাহামুদ নগরের মিজানুর রহমান মুকুলের ছেলে মিশাল(৩২) কে হাতেনাতে আটক করে।সঙ্গে থাকা অপরাপর চোরেরা পালিয়ে যায়।
আটককৃত চোরদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা মুল্যের মালামাল উদ্ধার করা হয়।পরবর্তীতে সংবাদ পেয়ে মহিউদ্দিন সিদ্দিকী সঙ্গীয় অন্যান্য ইন্টারনেট ব্যাবসায়ীদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক চোরদ্বয়কে থানায় নিয়ে যান।
কিন্তু থানার ডিউটি অফিসার এসআই আহাদ আইনী সহায়তা না দিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।একপর্যায়ে ওসি সাহেব আসলে তারপর ব্যাবস্থা গ্রহণের কথা বলে ভুক্তভোগী ও আটক চোরদের বসিয়ে রাখেন ঘুষ বানিজ্যের সিদ্ধহস্ত এসআই আহাদ।
সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে থানার কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যের অসতর্কতা এবং দায়িত্বে অবহেলার সুযোগে আটককৃত চোর মিশাল দৌড়ে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে নিজেদের দায় এড়াতে এবং মুল ঘটনা আড়াল করতে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক বেলা ১২ টার দিকে বাদী মহিউদ্দিন সিদ্দিকী সহ অন্যান্য ব্যাবসায়ীদের নিজ অফিসে ডেকে নিয়ে আইনী মারপ্যাঁচ সহ বিভিন্ন কৌশলে জোরপূর্বক পূর্বের এজাহার পরিবর্তন করে নিজেদের সুবিধামত লিখিয়ে নেয়। থানা পুলিশের এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরণে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে পড়েন।
অভিযোগকারী মহিউদ্দিন সিদ্দিকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,রোববার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে জনতা কর্তৃক ধুত ২ চোর রাজীব ও মিশাল কে থানায় নিয়ে যাই।কিন্তু ডিউটি অফিসার এসআই আহাদ আমাদের সঙ্গে চরম অপেশাদারি আচরণ করেন।
পুলিশের গাফিলতির কারনে থানার ভেতর থেকে ১ জন চোর দৌড়ে পালিয়ে যায়।পরবর্তীতে বেলা ১২ টার দিকে ইন্সপেক্টর আবু বকর সিদ্দিক আমাকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে আগের এজাহার পরিবর্তন করে দিতে বলেন।
আমি আপত্তি করলেও এসআই সাইফুল ইসলাম পাটোয়ারী নতুন এজাহার প্রিন্ট দিয়ে আনে এবং স্বাক্ষর করতে বলে।একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে পরিবর্তিত এজাহের স্বাক্ষর করি।
থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষ থেকে আসামি পলায়নের বিষয় জানতে চাইলে এসআই আহাদ বলেন, অসাবধানতা বশত আটককৃত চোর মিশাল পালিয়ে গেছে। তবে তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, আটককৃত চোর পালিয়ে যাওয়ার বিষয় জানা নাই। তবে বাদীর এজাহারের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং জড়িত আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক চোরদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।