নারায়ণগঞ্জ বন্দরের ফনকুল এলাকায় পিবিএম নামের এক ইটভাটায় ৩ শ্রমিককে মধ্যযুগীয় কায়দায় লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন ও জোরপূর্বক কাজ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ইটভাটার ম্যানেজার জসিম উদ্দিন (২৫) কে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টা দিকে নির্যাতিত শ্রমিকরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ৩ শ্রমিককে উদ্ধার করে। এবং ইটভাটার ম্যানেজার জসিমকে গ্রেপ্তার করে।
নির্যাতিত ওই ৩ শ্রমিকরা হচ্ছে সুদুর সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ থানার শহিদুল ইসলামের ছেলে মাজহারুল ইসলাম(২৩),একই এলাকার আরসাদ আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৩০) ও মৃত মোমরেজ মিয়ার ছেলে আবু বকর (৪০)। গ্রেপ্তারকৃত ম্যানেজার জসিম পাবনা জেলার চাঁদমহল থানার কদমতলী এলাকার তফিজউদ্দিন মিয়ার ছেলে।
এ ব্যাপারে নির্যাতিত ওই ৩জন শ্রমিক বাদী হয়ে ওই ইটভাটার মালিকসহ ৬জনকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং২৩(২)২২ইং।
আসামীরা হলেন, মালিক বন্দরের দাসেরগাঁও এলাকার মোস্তফা মিয়ার ছেলে মামুন হোসেন (৩০), ফনকুল এলাকার মো. হোসেনের ছেলে আনিসুর রহমান (৩০), মৃত তাহের আলীর ছেলে মোসলেম উদ্দিন (২৮), হাকিম আলীর ছেলে মো. রাজন (৩৫), ম্যানেজার জসিম উদ্দিন ও মতিউর রহমান।
জানা যায়,বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ফনকুল এলাকার পিবিএম নামীয় একটি ইনখোলায় ওই ৩জন শ্রমিক বেশ কিছুদিন যাবৎ কাজ করে আসছে। কিন্তু মজুরি বাবদ ওই শ্রমিকরা মালিক পক্ষের কাছে ৪৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।
কিন্তু কোনভাবেই পাওনা বুঝে না পাওয়ায় পরিবারের সাথে শ্রমিকরা মোবাইল ফোনে কথা বলে নিজ বাড়িতে যাবে বলে প্রস্তুতি নেয়।
পরে বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা বললে ইটভাটার মালিক পক্ষ কাজের পাওনা টাকা না দিয়া উল্টো ম্যানেজার জসিম উদ্দিন ও সর্দার মতিউর রহমানকে নির্দেশ দেয় ওই ৩জন শ্রমিক যাতে কিছুতেই ইটভাটা থেকে বাইরে যেতে না পারে। এবং তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শ্রমিকদের অমানুষিক নির্যাতন করে মধ্যযুগীয় কায়দায় লোহার শিকল দিয়ে বেধে রাখে।
এমনকি বিভিন্ন রকম হুমকি ধামকি দিয়ে জোরপূর্বক ইটভাটায় কাজ করায়। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই নির্যাতিত শ্রমিকরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করলে বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। বন্দর থানা পুলিশের একটি ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্যাতিত ৩ শ্রমিককে শেকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। পরে সেখান থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।