ফতুল্লা থেকে ভারতে পাচার হওয়ার সময় এক কিশোরীকে উদ্ধার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় পাচারের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া ২ যুবককে আটক করা হয়। ইতোমধ্যে তাদের ফতুল্লা মডেল থানা সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে গত রবিবার (৭ আগস্ট) রাতে কিশোরীর বাবা সোহেল বাদী হয়ে কিশোরী নিখোঁজের সাধারন ডায়েরী করেন।
সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তরুনীকে উদ্ধারসহ ওই অভিযুক্ত ২ যুবকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় তাদের হস্তান্তর করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আটককৃত যুবকরা হলো, মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভীটু হোগলা কান্দির মোক্তার হোসেনের ছেলে হাসান (১৮) ও চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ থানার গোয়ালঘরের শাহজাহানের ছেলে শামিম ওরফে রাকিব(১৮)। এদিকে, উদ্ধার হওয়া কিশোরীর বয়স ১৫ বছর। সে দক্ষিণ সস্তাপুর এলকার এবং এবলুম গার্মেন্টসে চাকুরি করতো।
উদ্ধার হওয়া কিশোরী জানায়, সে গত ১বছর ধরে এবলুম গার্মেন্টসে চাকুরী করে আসছে। অপরদিকে রনি ৬ মাস পূর্বে চাকুরীতে যোগদান করে এবং সস্তাপুর এলাকায় ভাড়ায় বসবাস করে। উভয়ে একই গার্মেন্টেসে চাকুরী করার সুবাদে রনির সাথে ৫মাস পূর্বে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে রনির পরামর্শে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। সিদ্ধান্ত নেয় গার্মেন্টস থেকে বেতন পেয়ে তারা পালিয়ে যাবে। রনি তখন কিশোরীকে জানায় তার বন্ধু হাসান তাকে গার্মেন্টসের সামনে থেকে নিয়ে যাবে। সে মোতাবেক ৭ আগস্ট রাতে বেতন পেয়ে কিশোরী গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে হাসানের সাথে রিক্সায় করে রনির নিকট যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। অতপর রিক্সা ছেড়ে সিএনজি নেয়। পথিমধ্যে তাদের সাথে যোগ দেয় শামিম ওরফে রাকিব নামক হাসানের পরিচিত এক সহোযোগি। তারা তখন বাসে চড়ে চলে যায় সীমান্তবর্তী এলাকায়। সেখানে তারা দুপুর দুইটার দিকে বিজিবির হাতে আটক হয়। আটক হওয়ার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সে বুজতে পারেনি তাকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে প্রেমের অভিনয় প্রেমিক রনি মানব পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনেয়ার হোসেন মোল্লা জানায়, কিশোরী মেয়েটি কথিত প্রেমিক রনির কথায় বিশ্বাস করে, ৭ আগস্ট গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী হাসানের সাথে দেখা করে। হাসান তখন নিয়ে যায় শামিম ওরফে রাকিবের নিকট। সেখান থেকে তারা বাসে করে জমাইদাহ বর্ডার এলাকায়। তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে ৮ আগস্ট তাদেরকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে থানা পুলিশ কে জানালে তারা কিশোরীসহ পাচারাকারী হাসান ও শামিম ওরফে রাকিবকে মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। কিশোরীর কথিত প্রেমিক মূল হোতা রনিকে গ্রেপ্তারের চেস্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু জানায়, মেয়েটিকে পাচারের উদ্দশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। পরে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধার সহ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে।