শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো আইভীকে আইভীকে বহনকারী পুলিশের গাড়িতে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ সাবেক মেয়র আইভী গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জে তিতাসের অভিযানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি প্রাণের বিদ্যাপীঠ সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় -৯৪: পাঠশালার সেই সোনালী দিনগুলো আর ফিরবে না, তবে স্মৃতির পাতায় চিরঅম্লান। সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী বিহারী কলোনি এলাকায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ডিলার নাহিদের মাদক ব্যাবসা অনৈতিক ও অযৌক্তিক দাবি পুরন না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের নামে অপপ্রচার এর অভিযোগ ‘ডাবল টাইমিং’ অভিযোগে অবাক অহনা, প্রশ্ন তুললেন শামীমকে নিয়ে প্লে-অফের আগে ব্যাঙ্গালুরু দলে বড় ধাক্কা, স্কোয়াডে রদবদল ভারতের গর্বের ৫টি যুদ্ধবিমান এখন কেবল ছাই আর ধ্বংসস্তূপ: শেহবাজ

প্রাণের বিদ্যাপীঠ সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় -৯৪: পাঠশালার সেই সোনালী দিনগুলো আর ফিরবে না, তবে স্মৃতির পাতায় চিরঅম্লান।

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫, ৩.৫১ এএম
  • ২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মামুন হোসেন: মানুষের জীবনে কিছু মুহূর্ত থাকে, যা সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায় না। বারবার স্মৃতির দরজায় কড়া নাড়ে সেই দিনগুলো, যেগুলো আমাদের জীবনের ভিত্তি তৈরি করেছে। এমনই এক অপরূপ স্মৃতির নাম — “সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় -৯৪”, আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠ।সেই বিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না, ছিল আমাদের দ্বিতীয় পরিবার।”শৈশবের পাঠশালাই আমাদের জীবনের প্রথম পাঠকক্ষ। এখানেই আমরা অক্ষর জ্ঞান থেকে শুরু করে শিষ্টাচার, নৈতিকতা এবং মানবিকতা শিখি। পাঠশালার সরলতা ও স্নেহময় পরিবেশ আমাদের মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্নেহ ও সহানুভূতি আমাদের ভিত শক্ত করে। খেলাধুলা,, কবিতা আর বন্ধুত্বের হাত ধরেই গড়ে ওঠে আমাদের চরিত্রের বুনিয়াদ। এই পাঠশালার অভিজ্ঞতাই জীবনের পথে প্রথম আত্মবিশ্বাস জোগায়। তাই বলা যায়, শৈশবের পাঠশালাই আমাদের মানুষ হয়ে ওঠার সূচনা স্থান, যা আজীবন স্মৃতিতে গাঁথা থাকে। একত্রে বেড়ে ওঠা, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা ভাগ করে নেওয়া এবং জীবনের প্রথম পাঠগুলো শেখার আশ্রয় ছিল এই বিদ্যালয়। ১৯৯৪ সালের সেই দিনগুলো যেন এক স্বপ্ন-সময় ছিল — যেখানে প্রতিদিনই ছিল কিছু নতুন চমক, কিছু নতুন অভিজ্ঞতা।সকালের ঘণ্টা বাজতেই ক্লাসরুমে ঢোকার হুড়োহুড়ি, বইয়ের ব্যাগে অগোছালো খাতা-কলম, বেঞ্চে বসে বন্ধুদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পড়া, এসবই যেন ছিল এক অনন্য ছন্দ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কঠোর শাসনের মধ্যেও লুকিয়ে ছিল অপার স্নেহ। তাঁদের চোখের দৃষ্টি আজও মনে পড়ে — যেখানে ছিল অনুপ্রেরণা, ভালোবাসা আর আশীর্বাদ।টিফিন পিরিয়ড ছিল এক ভিন্ন উৎসব। কেউ ভাগ করে খেতো টিফিন, কেউ খেলতো মাঠে ফুটবল বা দাঁড়িয়াবান্ধা। সামান্য ঝগড়া থেকে শুরু করে গভীর বন্ধুত্ব — সবকিছুই গড়ে উঠেছিল এই স্কুল চত্বরে। যারা আজ জীবনের নানা পথে ছড়িয়ে পড়েছে, তাদের সেই নিষ্পাপ বন্ধুত্বের শিকড় ছিল এই বিদ্যালয়ে।
শ্রাবণের বৃষ্টিভেজা দুপুরে জানালার পাশে বসে ক্লাস করার যে অনুভূতি, তা আজকের কাঁচের অফিস কক্ষে বসে পাওয়া যায় না। পরীক্ষার আগে সবার মিলিত পড়াশোনা, কাউকে কাঁধে চাপিয়ে বাসায় পৌঁছে দেওয়া, কিংবা স্কুল থেকে ফেরার পথে ঠেলাগাড়ির আইসক্রিম খাওয়া — এই সব ছোট ছোট স্মৃতিগুলো যেন আজও হৃদয়কে কাঁপিয়ে তোলে।
বিদ্যালয়ের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, একুশে ফেব্রুয়ারির, স্বাধীনতা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান — এগুলো আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম আর দলগত চেতনার বীজ বপন করেছিল। আমরা শিখেছিলাম শুধু পাঠ্যপুস্তক নয়, শিখেছিলাম জীবনকে — সংগ্রাম, সহানুভূতি, নেতৃত্ব ও বন্ধন।আজ সবাই হয়তো ব্যস্ত জীবনের নানা ছকে বন্দী, কিন্তু হৃদয়ের কোণে এখনো গেঁথে আছে সেই পুরনো দিনের গন্ধ। বন্ধুরা কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার,কেউ ব্যাংকার, কেউ ব্যবসায়ী — কিন্তু “বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় -৯৪” আমাদের সবার পরিচিতির মূল উৎস। একবার চোখ বন্ধ করলে যেন আবার দেখতে পাই সেই পুরনো ভবন, সবুজ মাঠ, এবং প্রিয় বন্ধুদের মুখ।
হয়তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না সেই দিনগুলো, কিন্তু স্মৃতির পাতায় তারা অম্লান, অক্ষয়। সময় যতই এগিয়ে যাক না কেন, আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠের স্মৃতি চিরন্তন। কারণ, শৈশবের পাঠশালাই আমাদের জীবনের ভিত্তি, যেখানে আমরা মানুষ হতে শিখেছিলাম।আমাদের শিক্ষকরা ছিলেন সত্যিকার অর্থে আদর্শবান। তাঁরা শুধু পাঠ্যপুস্তক পড়াননি, জীবনের মূল্যবোধ শেখাতেন। শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, সততা ও মানবিকতা তাঁদের আচরণে ফুটে উঠত। আমাদের চরিত্র গঠনে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা আজও মনে পড়ে। তাঁরা আমাদের শুধু ভালো ছাত্র নয়, ভালো মানুষ হিসেবেও গড়ে তুলতে চেয়েছেন। সেই আদর্শই আজ আমরা জীবনের নানা পর্যায়ে প্রয়োগ করি। তাঁদের শিক্ষা ও আদর্শ আমাদের চলার পথে প্রেরণা জোগায়। তাই গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমাদের শিক্ষকরা ছিলেন সত্যিকারের আদর্শবান, এবং সেই আদর্শ এখনও আমরা লালন করি।

আজও হৃদয় বলে —
“যত দূরেই থাকি না কেন, সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় -৯৪ আমার চেতনার শিকড়, ভালোবাসার অপর নাম।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort