মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

পুলিশ সদস্যদের জন্য ১২ নির্দেশনা আইজিপির

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪, ৬.১৭ এএম
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

পুলিশের সব খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গুলির হিসাব ও বাহিনীর সদস্যদের সবরকম সমিতি-অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম স্থগিত করাসহ ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের নবনিযুক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে গোপনে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। কিন্তু মাঝখান থেকে ঝরে যায় ছাত্র-জনতার ৪ শতাধিক প্রাণ। এ গণঅভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি তোপের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। থানায় থানায় হামলা পুলিশ সদস্যদের ধরে ধরে মারধর ও হত্যার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে পুলিশসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরকার বা আওয়ামী ঘেঁষা কেউ আটক হন। কেউ বা আত্মগোপনে চলে যান। এমন পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়েছে পুলিশের চেইন অব কমান্ড। দাবি উঠছে পুলিশ বাহিনীকে পুনর্গঠন ও সংস্কারের।

উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে সারা দেশে থানায় হামলা এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশের হতাহতের ঘটনায় পুলিশের ভেঙে পড়া চেইন অব কমান্ড ও শৃঙ্খলা ফেরানোর উদ্যোগ ‍নিতে মো. ময়নুল ইসলামকে নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নেতৃত্বে এসেই তিনি গতকাল বুধবার ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেন এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে পুলিশ সদস্যদের স্ব স্ব ইউনিটে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
পুলিশের চেইন অব কমান্ড ও শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য ১২ দফা নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে—

 

১. রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, পিওএম, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), সব মেট্রোপলিটন এবং জেলা পুলিশ লাইন্সসহ অন্যান্য সকল পুলিশ ইউনিটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ফোর্সের শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড পুনরুদ্ধার ও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।

২. ঢাকা মহানগর পুলিশের রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স, পিওএম, এপিবিএন, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, সব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষায়িত সব পুলিশ ইউনিটের সব অফিসার এবং ফোর্সকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে।

৩. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব মেট্রোপলিটন, জেলা, নৌ, রেলওয়ে এবং হাইওয়ে থানার অফিসার ও ফোর্সদেরকে স্ব স্ব ইউনিটের পুলিশ লাইন্সে যোগ দিতে হবে।

৪. পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অপারেশন্স কন্ট্রোল রুম সক্রিয় করা, দায়িত্ব বণ্টন করা এবং সারা দেশের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

৫. ফোর্সের মনোবল বৃদ্ধি এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৬. জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের দাফন/সৎকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. পুলিশের সকল অস্ত্র-গুলির হিসাব, খোয়া/হারানো অস্ত্র-গুলির হিসাব, সিসি (কমান্ড সার্টিফিকেট) সহ সব ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হবে।

৮. সব অস্ত্রাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় গার্ড অতি সত্বর মোতায়েন করতে হবে। সিনিয়র অফিসাররা পুলিশ রেগুলেশন্স অনুযায়ী অস্ত্রাগারের নিরাপত্তা, অস্ত্র-গুলি ইস্যু ও জমা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রার লেখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধিবিধান পালন নিশ্চিত করবেন।

৯. মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপাররা নিজ নিজ এলাকার জ্যেষ্ঠ নাগরিক, পেশাজীবী, ছাত্র প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন করবেন। এই কমিটি থানা এবং থানা এলাকার নিরাপত্তা বিধানে আপদকালীন সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

১০. থানার সব অফিসার ও ফোর্সের ব্যক্তিগত হেফাজতে থাকা অস্ত্র-গুলি স্ব স্ব পুলিশ লাইনসে বা নিকটস্থ অস্ত্রাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।

১১. বাংলাদেশ পুলিশের সব সমিতি এবং অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

১২. শৃঙ্খলার স্বার্থে সব স্তরের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত, দলীয়, ব্যাচ, সমিতি, অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে পুলিশের কার্যক্রম সংক্রান্ত কোনো প্রকার বিবৃতি, দাবি, মন্তব্য বা প্রত্যুত্তর করতে পারবে না। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort