প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের সেবা করাই পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। সেখানে কোনো ধরনের অনুরাগ বা বিরাগের সুযোগ নেই। দায়িত্বে অবহেলা বা নৈতিক পদস্খলন অমার্জনীয় অপরাধ।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা মানবিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আগামীকাল (শনিবার) ডিএমপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সব সদস্যকে শুভেচ্ছা জানান। এছাড়া তিনি এ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। আমরা ধাপে ধাপে বাংলাদেশ পুলিশের জনবল বৃদ্ধি করেছি। আমাদের সরকার থানা, ফাঁড়ি, তদন্ত কেন্দ্র, ব্যারাক, আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসাসেবার লক্ষ্যে ১০ তলা ভবন করে রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। প্রতি বিভাগে একটা করে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। আকাশপথে সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে পুলিশের গতিশীলতা ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে ২টি হেলিকপ্টার ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
জঙ্গি ও সন্ত্রাস নির্মূলে ইতোমধ্যে পুলিশ বাহিনীতে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট এবং কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশে নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতিপ্রাপ্তির জটিলতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ইতোমধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জনগণ ৯৯৯ ব্যবহার করে এখন খুব সহজেই ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের সেবা পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও দক্ষ বাহিনীতে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের সদস্যরা পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এর ফলে সূচিত হয়েছিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুলিশ বাহিনীর প্রায় ১৪ হাজার বাঙালি পুলিশ সদস্য কর্মস্থল ত্যাগ করে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য শহিদ হন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে আত্মোৎসর্গকারী সব পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধা জানান।