মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ১৬ টি অস্থায়ী হাট বসেছে । এ বছর জেলা প্রশাসকের কাছে ২১ টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি চায় নাসিক। সার্বিক বিবেচনায় ১৬ টি অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এসব অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দিয়ে নাসিকের আয় হয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৯০০ টাকা।
হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ও নির্দেশনার বিষয়ে জানা যায়, প্রতিটি পশুর হাটে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আলোকায়নসহ নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করেছে নাসিক। স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট পরিচ্ছন্ন রাখতে ইজারাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান, কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বা হয়রানি দেখা গেলে কঠোরভাবে দমনের জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় থাকবে। এছাড়াও করোনা প্রতিরোধে ক্রেতা-বিক্রেতাদেরকে হাটে মাস্ক পরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া হাটে শিশু ও বৃদ্ধদের ঢুকতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সূত্রমতে, গত ৩ জুলাই নাসিকের অস্থায়ী ১৬ টি হাটের দরপত্র সম্পন্ন হয়েছে। ১৬ টি হাটের মধ্যে সর্বোচ্চ দর পাওয়া যায় ৮নং ওয়ার্ডের গোদনাইল ইব্রাহীম টেক্সটাইল মিলস’র খালি মাঠ থেকে। এই হাটের ইজারা মূল্য ২২ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এছাড়া সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের ১নং ওয়ার্ডের সিআই খোলা বালুর মাঠে ইজারা বাবদ পাওয়া গেছে ২ লাখ টাকা, ৩ নং ওয়ার্ডের সানারপাড় লিথি গার্মেন্টস সংলগ্ন খালি জায়গার ইজারা পাওয়া যায় ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৪ নং ওয়ার্ডের তাজ জুট বেকিং কোম্পানির পশ্চিম পাশের মাঠ থেকে ইজারা উঠে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা , একই ওয়ার্ডের টাইগার অয়্যার রি-রোলিং মিলস এর মাঠ সর্বোচ্চ দর ১২ লাখ ২ হাজার ১০০ টাকা, ৫নং ওয়ার্ডের ওমরপুরের সিদ্ধিরগঞ্জ বাজরের সংলগ্ন খালি জায়গার সর্বোচ্চ দর ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ৯নং ওয়ার্ডের জালকুড়ি উত্তরপাড়া দশ পাইপ সংলগ্ন তোতালিব বেপারীর বালুর মাঠের সর্বোচ্চ দর ৩ লাখ টাকা পাওয়া যায়।
কদমরসূল অঞ্চলের সর্বোচ্চ ইজারা পাওয়া যায় ২৫ নং ওয়ার্ডের উত্তর লক্ষণখোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন খালি স্থান থেকে। এখান থেকে ইজারা পাওয়া গেছে ২১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এছাড়া ১৯ নং ওয়ার্ডের সামিট পাওয়ার প্লান্টের পেছনের পশুর হাটের ইজারা মূল্য পাওয়া যায় ৫ লাখ টাকা। ২০নং ওয়ার্ডের সোনাকান্দা মাঠের পশ্চিমের খালি জায়গা সর্বোচ্চ দর ১৫ লাখ টাকা।
২১ নং ওয়ার্ডের স্কুল ঘাট সংলগ্ন বালুর মাঠের দর পাওয়া যায় ৩ লাখ টাকা। ২৩ নং ওয়ার্ডের পূর্ব পাড়া লতিফ হাজীর মোড় সংলগ্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন খালি জায়গায় হাটের ইজারা মূল্য পাওয়া যায় ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা, এই ওয়ার্ডের সমরক্ষেত্র পশুর হাটের ইজারা পাওয়া যায় ২ লাখ ১ হাজার টাকা।
২৪ নং ওয়ার্ডের বক্তারকান্দি এলাকায় সংলগ্ন খালি জায়গার সর্বোচ্চ দর পাওয়া যায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, একই ওয়ার্ডের কাইতালির গোলন্দাজ সাহেবের খালি জায়গার সর্বোচ্চ দর পাওয়া যায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং নবীগঞ্জ গুদাড়াঘাট সংলগ্ন খালি জায়গার সর্বোচ্চ দর ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইজারাদার বলেন, কোরবানি ঈদের কয়েকদিন আগে নগরের অলিগলিতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অনুমোদন ছাড়াই ছোট ছোট বাজার বসায়। এভাবে অবৈধ ভাবে গরু বিক্রির ফলে লাখ লাখ টাকায় বৈধ পশুর হাটের ইজারা নিয়ে লোকসান গুনতে হয়। বিষয়টি প্রশাসন নজরে আনলে এই আমাদের এই কারণে ক্ষতি সম্মুখীন হতে হবে না।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বাজার কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে ও কদমরসূল অঞ্চলে ১৬ টি হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। দরপত্র উন্মুক্ত করার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতাদের নির্বাচন করা হয়েছে। নির্দেশনা রয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমনের বিষয়টি মাথায় রেখে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে হাট পরিচালনা করতে হবে।