নিরাপত্তা পরিষদকে ‘সেকেলে, অন্যায্য ও অকার্যকর’ ব্যবস্থা আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া শনিবারের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ বন্ধে ব্যর্থতা সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তা পরিষদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এদিকে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গাজায় সংরক্ষিত এলাকায় এক রাতে ১৯ জন ইসরাইলি হত্যার শিকার হয়েছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতা বিভিন্ন সময়ে এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে বাধা হয়েছে। আলজাজিরা অ্যারাবিয়াকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘এটা (নিরাপত্তা পরিষদ) বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’ জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হলো, সুদান, গাজা, ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদ নিজের সক্ষমতা প্রমাণে পদ্ধতিগতভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
২০১৭ সাল থেকে জাতিসংঘের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন আন্তোনিও গুতেরেস। এর আগে তিনি পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১১ মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজাযুদ্ধ সম্পর্কে গুতেরেস বলেন, জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা, বিশেষ করে মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো গাজায় প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে এটা ঠিক যে নিরাপত্তা পরিষদ যুদ্ধ বন্ধে রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আর এ ব্যর্থতা জাতিসংঘের অন্য সংস্থাগুলোকে আশাহত করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ মানে শুধু নিরাপত্তা পরিষদ নয়।’ তিনি উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের কর্মীরা যুদ্ধক্ষেত্রে দারুণ কাজ করছেন; বিশেষ করে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কর্মীরা। এটাও সত্য, মানুষ তাদের দিকে তাকিয়ে ভাবে, নিরাপত্তা পরিষদ তাদের ব্যর্থ করেছে। গুতেরেস বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতা মাঠপর্যায়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের গুরুতর অসুবিধায় ফেলেছে।’
এদিকে গাজায় শরণার্থীদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা বলে পরিচিত আল-মাওয়াসিতে ইসরাইলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে শুক্রবার এক রাতে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। স্থানীয় লোকজন এবং গাজার প্রশাসনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।