সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ সোনারগাঁয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার লামিয়া চৌধুরীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী দিতির বসতবাড়ি নিয়ে ভাই-বোনের দ্বন্দ্বের ফলে তার মেয়ের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে লামিয়া প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। এছাড়া ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন লামিয়া। এতে তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাহায্য চেয়েছেন।
লামিয়া চৌধুরী তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, কিছু ব্যক্তি এই ঘটনাটিকে রাজনৈতিক রঙ দেয়ার চেষ্টা করছেন এবং আমাকে রাজনীতির সাথে জড়ানোর অপচেষ্টা করছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমার বাবা প্রয়াত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী এবং মা প্রয়াত চিত্র নায়িকা দিতি। তারা ছিলেন সংস্কৃতির মানুষ, আমিও তাদের আদর্শেই চলেছি এবং চলব।’
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে লামিয়া বলেন, ‘এই হামলাটি কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি সম্পূর্ণভাবে জমি দখল ও আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছে। আমি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি এবং দাঁড়িয়ে থাকব। আমি অনুরোধ করছি, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আমি এবং আমার পরিবারবর্গের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা চাই।’
জমি দখল করার উদ্দেশ্যে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আমার উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। লাঠি, দেশীয় অস্ত্র এবং ইট-পাথর নিয়ে তারা আমার উপর নির্মম আঘাত হানে, যার ফলে আমি গুরুতর আহত হয়েছি এবং ইমিডিয়েট (দ্রুত) সার্জারি করা লাগবে।’ অন্যদিকে ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিয়ে লামিয়া তার ফেসবুক পেইজে আরও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ‘এক্সরে রিপোর্ট দেখলাম। আমার পাঁয়ের হাড্ডি ভেঙে ফেলেছে। পিঠেও ইনজুরি আছে।’
জানা গেছে, সোনারগাঁ পৌরসভা এলাকায় অভিনেত্রী দিতিদের বসতবাড়ি। সেখানে তার ভাই ও বোনরা বসবাস করেন। তাদের বসতবাড়ি ও আশপাশের সম্পত্তি নিয়ে দিতির সঙ্গে তার ভাই টিপুর বেশ কয়েক বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। দিতির ভাই টিপুর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী প্রীতি কয়েক দফা জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন।
এরই ধারাবাহিকতায় টিপুর স্ত্রী প্রীতি গত ২২ ফেব্রুয়ারী শনিবার স্থানীয় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে ফের জমি দখলের চেষ্টা চালান। সেসময় দিতির আরেক ভাই আনোয়ার, বোন ও তার মেয়ে লামিয়া বাঁধা দেন। এসময় দখলদাররা লামিয়ার গাড়িতে হামলা চালিয়ে গাড়ির কাঁচ ভেঙে ফেলে। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে লামিয়ার পাঁয়ে ইটের আঘাত লাগলে তিনি মারাত্মক আহত হন। এর কিছু পরই তিনি আহত অবস্থায় সেই স্থান ত্যাগ করে ঢাকায় চলে যান।
এসময় ঘটনার দিন বিকেলেই ঢাকায় ফিরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজের ওপর হামলাকারীদের ছবি দেখান লামিয়া। তাদের পরিচয় না জানলেও এই ব্যক্তিরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।