বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৩১ জুলাই) দুপুরে চাষাঢ়া নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি’র সবাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, নানা কারণে বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ সমাদৃত ছিল। কিন্তু এ নারায়ণগঞ্জ আর উন্নয়নের নারায়ণগঞ্জ হিসেবে পরিচিত পায় না। এখন পরিচিতি পাচ্ছে গডফাদার ও গডমাদারের নগরী হিসেবে। এক সময়ে নারায়ণগঞ্জের ভালো মানুষেরা আর চুপচাপ বসে থাকবে না। এখানকার গডফাদার ও গডমাদারের সাম্রাজ্যের পতন ঘটাবে।
হাবিব উন নবী খান সোহেল আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জিয়াউর রহমানের সৈনিকেরা একদিন সন্ত্রাসের তিলক মুছে ফুলের বীজ ফুটবে। নারায়ণগঞ্জ একদিন আর সন্ত্রাসের নগরী হিসেব পরিচিতি বাদ দিয়ে শান্তির শহর হিসেবে পরিচিতি পাবে। আমি নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের অনুরোধ করবো আপনারা প্রস্তুত থাকেন। অচিরেই আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্দেশ দিবেন। তখন আমাদের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। প্যাকেজ করে আমাদের নেত্রীর যেমন মুক্তি আদায় করতে হবে তেমনি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবে সেই সঙ্গে সরকারের পতন ঘটবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা কাপড় চোপড় রেডি রাইখেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট কিন্তু পালানোর সময়ে কাপড় পায়নি। আপনারা যাতে পান সেটা রেডি করে রাইখেন।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, বাংলাদেশের ২ কোটি মানুষ গুম হয়ে গেছে, এটা হলো আজকের তাজা খবর। এটা এমন একটা সরকার যে সরকার আদম শুমারিতেও ফেল করে, জিডিপিতেও ফেল করে। দশ বছর পর এই সরকার আদম শুমারি করেছেন সেখানে সারে ষোল কোটি লোক দেখানো হয়েছে, আর চার কোটি লোক নাই। এই আদম শুমারিতে আমাদের বিএনপির দুই কোটি লোক নাই, তারা গুম হয়ে গিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, একটি নিরপেক্ষ ও সুস্থ নির্বাচন দেন, নয়তো ইতিহাস আপনাকে রেহায় দিবে না। দুই কোটি টাকার জন্য যদি খালেদা জিয়া কে জেল খাটতে হয়, তাহলে আপনি তো হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আপনার দোষরদের পাচার করার সুযোগ করে দিয়েছেন। কুইক রেন্টালের নামে আপনি ৭৮ হাজার কোটি টাকা কেপাসিটি চার্জ দিয়েছেন। আর এক ইউনিট বিদুৎও আমরা পাই নাই। সেই টাকা আপনার সহযোগিরা ভাগ করে নিয়ে গেছে। এই জবাবা আপনাকে একদিন অবশ্যই দিতে হবে। তাই আপনি ক্ষমতা তেকে পদত্যাগ করুন। নাহলে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আপনার বিদায়ের ঘন্টা বাজাবো। আমরা মরে যাবো তবু রাজপথ ছাড়বো না। আমরা জনগরে জন্য এই সৈরাচারি শেখ হাসিনার শেষ ঘন্টা বাজিয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ। এবং তারেক রহমানকে বীরের বেশে এই দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, আমরা যখন ঐক্যব্ধ হবো, তখন এই কুলাঙ্গার আওয়ামী লীগ আমাদের মাঝে ভেদাভেদ তৈরি করে রাখে। আমাদের সমাবেশ নষ্ট করতে একটি কুচক্রি মহল আমাদের বাঁধা প্রদান করে থাকে। কেউ যদি মনে করে আমি অনেক বড় নেতা, তাহলে মাঠে আসেন দেখবো আপনি কত বড় নেতা। যারা আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করে চলে তারাই উস্কানি মূল্যক বক্তব্য দেয়। সবার রক্তই কিন্তু গরম। কেউ যদি মনে করেন আপনি অনেক বড় কিছু, তাহলে সেটা অনেক বড় বোকামি। এখান থেকে হাত-পা নিয়ে যেতে পারবে না। কোন আওয়ামী লীগের দালাল যদি এই সভা পন্ড করতে চায় তাদের হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হবে। আমরা এই নারায়ণগঞ্জের সন্তার, কাউকে ভয় পাই না। আমি কথা বলতে গেলে অনেকের গা জ্বলে।
এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন, সকল থানা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।