আর মাত্র ১ দিন পরেই পবিত্র কোরবানি ঈদ। আর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে গরম মসলার বেচাকেনা। তবে কোরবানিতে অন্যতম প্রয়োজনীয় মসলা পণ্য এলাচ এবং দারুচিনির দামও এখন চড়া। শুক্রবার (৮ জুলাই ) সকালে শহরের বিভিন্ন বাজার গুরে চোখে পরে এমন দৃশ্য।
ক্রেতারা বলছেন, কোরবানি ঈদে নিত্যপণ্যের মতো মসলাও অপরিহার্য পণ্য। কারণ রান্নায় অবশ্যই মসলা ব্যবহার করতে হয়। ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজারে নতুন করে মসলার দাম বাড়ায় বড় বিপদের মুখে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যমআয়ের মানুষ।
নারায়ণগঞ্জের মসলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মসলার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বাজারে প্রতিটি মসলার দাম কিছুটা বেড়েছে । প্রতি কেজি এলাচ দাম ২ হাজার টাকা হলেও ৪ শ’টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দারুচিনি। এদিকে এক কেজি জিরা সাড়ে ৪শ’টাকা দরে বিক্রি হলেও প্রতি কেজি সাহি জিরা ক্রয় করতে গুনতে হয় ১২শ’টাকা। পেস্তা বাদামের কেজি ২ হাজার টাকা ও কিসমিস বিক্রি হচ্ছে ৪শ’টাকা কেজিতে । অন্য দিকে এক কেজি সাদা গোল মরিচের দাম ২ হাজার ৫শ’ টাকা হলেও কালো গোল মরিচের দাম মাত্র ৮শ’ টাকা । এক কেজি বড় হজ ১শ’৫০ টাকায় ক্রয় করতে পারলেও প্রতি কেজি ছোট হজের জন্য গুনতে হচ্ছে ২শ’ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি কাচা বাদাম ২শ’ ৫০ টাকা কেজি ও কাঠ বাদাম ১ কেজি ৮শ’ টাকা কিন্তু এক কেজি কাজু বাদামের দাম ১২শ’ টাকা । স্টার ফল প্রতি কেজির মুল্য মাত্র ১২শ’ ২০ টাকা, লবঙ্গ এক কেজি ১৪শ’ টাকা। জায়ফল প্রতি পিস ১০ টাকা ও আলু বোখারা এক কেজি ৪শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মসলা কিনতে আসা রেজাউল বলেন, এবার ঈদে কোরবানি ভাগ দিয়েছি। ঈদের দিন জামাইসহ আত্বীয় স্বজনরা বেড়াতে আসবে। তাই মাংস রান্নার জন্য সব ধরনের মসলা কিনছি। তবে এর আগে প্রতিটি মসলার দাম কিছুটা কম থাকলেও এখন আকাশ বরাবর। আজ বাজারে এসে দেখি সব মসলার দাম অনেক বেশি । দাম বেশি হওয়ায় সব মসলাই কম করে কিনলাম।
শখি বেগম নামের একজন নারী মসলা কিতে আসছে, তার সাথে কথা হয় তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ বাবা, কোরবানি দিতে পারি না। তবে কোরবানি না দিলেও এই ঈদে অনেক মাংস পাই। ঈদে সব আত্মিয়-স্বজনরাই মাংস দেয়, তা রান্না করার জন্য মসলা তেলের প্রয়োজন। মসলা কিনতে বাজারে আসছি। আগের চেয়ে মসলার অনেক বেশি , তাই ৩০ থেকে ৪০ টাকার করে সব মসলা কিনলাম।
বাজারে আসা আরেক ক্রেতা বিল্লাল হোসেন বলেন, যে টাকা বেতন পাই, তা বাসা ভাড়া আর চাল-ডাল কিনতে চলে যায়। সামনে ঈদ তার আগেই মসলার দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। দাম জিজ্ঞেস করেই এখন চিন্তায় পড়ে গেলাম।
শহরের দিগুবাবুর বাজার এলাকার মসলা ব্যবসায়ী মোহর চান বলেন, আর মাত্র ১ দিন পরেই কোরবানির ঈদ তাই বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। তবে আগে দাম কম থাকায় সবাই বেশি করে মসলা কিনতো, কিন্তু এইবার দাম একটু বেশি হওয়াতে ক্রেতারা অল্প করে কিনছে।
তবে পাইকারি মসলা ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজারে আমরা মসলার দাম বাড়াইনি। খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ছে, তাই এখন মসলার দামও বাড়ছে। তবে চাল-ডাল, তেল-আটার দাম যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে মসলার দাম বাড়েনি বলে জানান তারা। দাম বৃদ্ধির পেছনের যুক্তি হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার পর ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পণ্য আমদানিতে খরচ বেড়েছে। দেশের ভেতরে পণ্য আনা নেওয়ার খরচও বেড়েছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার স্বার্থে অন্য পণ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম বৃদ্ধির হতেই পারে।