নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে এক শিক্ষককে লাঞ্ছনার অভিযোগে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেছেন অন্য শিক্ষকরাও। সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত রোববার দুপুরে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে স্কুলের গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক মাহবুবুর রহমানকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছনার অভিযোগ তোলা হয় স্কুলেরই দুই অভিভাবক সদস্য সরকার আলম ও ওয়াহেদ সাদত বাবুর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষুব্দ শিক্ষকরা কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
লাঞ্ছনার শিকার মাহবুবুর রহমান স্কুলের গভর্নিং বডির শিক্ষক প্রতিনিধি। তিনি বলেন, অপেক্ষমান তালিকায় থাকা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে গভর্নিং বডির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অভিভাবক সদস্য সরকার আলম ও ওয়াহেদ সাদত বাবু কয়েকজন অভিভাবককে নিয়ে এসে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন। বিষয়টি স্কুলের সভাপতিকে মুঠোফোনে জানাতে গেলে স্কুলের মাঠে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, এই ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সহকর্মীদের পরামর্শে তিনি সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান বলেন, দুই শতাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে সেই তুলনায় আসন নেই। ষষ্ঠ শ্রেণির ৪৪ আসন নিয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১০০ আসন রয়েছে। গত ৩১ মার্চ গভর্নিং বডির এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সভাপতি চন্দন শীল ভর্তির বিষয়টি দেখছেন। গত রোববার থেকে অপেক্ষমান কয়েকজনকে ভর্তি শুরু হয়। এমন সময় অনাকাঙ্খিত ওই ঘটনা ঘটে।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে এই স্কুলে জয়েন করেছি। এই ঘটনাটি নিয়ে আমি নিজেও বিব্রত। এর প্রতিবাদে আজ শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন এবং শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে অভিভাবক সদস্য সরকার আলম বলেন, ‘অপেক্ষমান তালিকার সিরিয়াল অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন শিক্ষক মাহবুবুর রহমান। তিনি সভাপতিকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে ভর্তি নিয়ে অনিয়ম করছেন। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। রোববার অভিভাবকরা এ নিয়ে মাহবুবুর রহমানের উপর চড়াও হয়। আমরা অভিভাবকদের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আমাদের নিজস্ব কোন চাহিদা নেই। সঠিক প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চলুক, এটাই চাই।’
এই বিষয়ে কথা বলতে নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীলের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।