রুদ্রবার্তা২৪.নেট: গতবছরের তুলনায় এবার নারায়ণগঞ্জের হাটগুলোতে কোরবানির পশু বেশি উঠেছে। তবে ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়াতে এখনও বেচা-কেনা জমে ওঠেনি বলে দাবি বেপারীদের। রোববার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েকটি হাট ঘুরে বেপারীদের কথার মিল পাওয়া গেছে। তবে পরিস্থিতি পাল্টাতে সময় লাগবে না বলছেন তারা। রাত থেকে ক্রেতা বাড়বে বলে আশাবাদী।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮টি ও সদর উপজেলায় আরও ১৪টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দুপুরে সিটি এলাকার গোদনাইলের ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী এলাকার ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিল মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটটি ঘুরে পর্যাপ্ত পশু দেখতে পাওয়া যায়। অধিকাংশই গরু, তবে কিছু ছাগলও রয়েছে। বেপারীদের হাকডাক থাকলেও ক্রেতার উপস্থিতি ছিল কম। একই চিত্র দেখা যায় জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাট ও সদর উপজেলার ফতুল্লা স্টেডিয়াম সংলগ্ন পশুর হাটেও। তবে তুলনামূলক অধিক ক্রেতা দেখা গেছে ফতুল্লার ডিআইটি মাঠের হাটে।
বেপারী ও হাট তদারকির দায়িত্বে থাকা লোকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, গত বছরের তুলনায় হাটগুলোতে কোরবানির পশুর সংখ্যা বেশি থাকলেও ক্রেতা অনেক কম। যারাও বা আসছেন কাঙ্খিত মূল্য না হওয়াতে ছুটছেন এক হাট থেকে অন্য হাটে। তবে ক্রেতাদের দাবি, গতবারের তুলনায় অনেক বেশি দাম চাইছেন। অন্যদিকে সময়ের ব্যবধানে গো-খাদ্যের দাম ও পরিবহণ খরচ হিসাবে পশুর দাম ঠিকই আছে বলছেন বেপারীরা।
এদিকে এবারও ভারত থেকে গরু না আসায় খুশি খামারিরা। দেশী জাতের গরুর দাম তুলনামূলক বেশিই হবে বলে জানান পশুর বেপারী আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, ভারত থেকে গরু না আসাতে সব হাটে দেশী জাতের গরু। এসব গরু মোটাতাজাকরণ করার তেমন সুযোগ নেই। তাছাড়া গো-খাদ্যের দাম ও পরিবহণ খরচও মাথায় রাখতে হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহ্জাদপুরের বেপারী বদরুজ্জামান বিশাল আকৃতির এক গরু নিয়ে এসেছেন নগরীর ২ নম্বর ঢাকেশ্বরীর হাটে। গরুটির ওজন ২২ মণেরও বেশি বলে দাবি তার। গরুটির দাম হাকছেন ৬ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবার আটটি গরু নিয়ে নারায়ণগঞ্জের এই হাটে আসেন। দরদামে না মেলায় বিক্রি হয়নি একটিও। বদরুজ্জামান বলেন, ‘লোকজন আসতাছে দেইখ্যা যাইতাছে এতটুকুই। রাখার জায়গা না থাকায় শহরের মানুষ এত আগে গরু কেনে না। কোরবানির আগের দিন গরু কেনে অনেকে। তাই হাটও তেমন জমে নাই।’
তবে একই হাটে ১৫টি গরু বিক্রি করেছেন ফরিদপুর জেলার সদরপুরের সেকন শিকদার। বদরুজ্জামানের মতো একই দিনে এই হাটে গরু নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সেকন শিকদার বলেন, বিক্রি করা গরুগুলোর ভালো দামই পেয়েছেন। ক্রেতা বাড়লে হাট খালি হতে সময় লাগবে না বলে মন্তব্য তার।
সিটি এলাকার জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাটের প্রধান আকর্ষণ সোনারগাঁয়ের নবাব। ১৮ মণ ওজনের এই অস্ট্রেলিয়ান সংকর জাতের গরুটির দাম চাওয়া হচ্ছে ৮ লাখ টাকা। নবাবের মালিক মো. সোহাগ বলেন, ‘শখ কইরা নাম দিছিলাম নবাব। ওর খাওয়া-দাওয়া পুরা নবাবগো মত। হাতে ধইরা খাওয়াইতে হয়। এমনে চাড়িতে দিলে খায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘নবাবসহ ৬টা গরু নিয়ে আসছিলাম, ১টা বেচছি। কাস্টমার কম। বিকেলে থেইকা জমতে পারে।’
এই হাটের হাসলি কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. শান্ত বলেন, ‘টুকটাক বেচা-কেনা চলাতাছে। হুট করেই জমে উঠবে হাট। অনেকেই দিনশেষে বিকেল কিংবা রাতে আসেন হাটে। দিনের বেলা খুব কম ক্রেতাই থাকে।’