সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘সরকার বনাম সরকারের নির্বাচন’ বলে মন্তব্য করে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে, দেশটা একটা একদেলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে চলছে।’
বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর একটার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
এর আগে তিনি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে তাঁর দলীয় এক নারী কর্মীর বাড়িতে হামলার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান।
নির্বাচন নিয়ে সারাদেশের সকল প্রার্থীদের ঢাকায় ডেকে দলীয় প্রধানের সাথে বসবেন এবং পরবর্তীতে দলীয় বক্তব্য পেশ করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান তৈমুর আলম।
তিনি বলেন, ‘আমরা এইরকম সাজানো নির্বাচনে আর যাবো না। এই নির্বাচন হইছে সরকার টু সরকার, নৌকাও সরকারের, স্বতন্ত্রও সরকারের। মনে হচ্ছে দেশটা একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে চলছে।’
‘তৃণমূল বিএনপি রাজপথে ছিল, রাজপথেই রাজনীতি করবে। আমরা আমাদের দলের চেয়ারম্যানের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। সব ক্যান্ডিডেটকে ঢাকায় ডাকবো, তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবো’, যোগ করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ-১ আসন (রূপগঞ্জ) থেকে দলীয় প্রার্থী হয়েছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। ওই আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর টানা চতুর্থবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন। ফলাফল অনুযায়ী, তৃতীয় হয়েছেন তৈমুর, হারিয়েছেন জামানতও।
ফলাফল নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রূপগঞ্জে সব ভূমিদস্যুরা আমার বিরুদ্ধে একাট্টা ছিল। তারা মনে করছে, তৈমুর আলম খন্দকার আসলে তাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। কারণ শুরু থেকেই আমি ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অবস্থানে ছিলাম। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, যাদের জমিজমা নিয়ে গেল তারাও তো ভয়ে-আতঙ্কে আর আগাইয়া আসলো না।’
‘এই দেশে আমাদের প্রজন্মের পক্ষে সুষ্ঠু রাজনীতি করা সম্ভব না। আগামী প্রজন্মও পারবে না। যদি সম্ভব হয় তৃতীয় প্রজন্ম আইসা দেশটাকে ঠিক করতে পারে। কারণ যারা সরকারে আছে তারা মনে করে, নির্বাচনে হেরে গেলেই তাদের জেলে যেতে হবে। বাংলাদেশে সিস্টেমই এইটা। যে ক্ষমতায় যায় তার প্রতিপক্ষকে জেলে দিয়ে দেয়’, বলেন তৈমুর।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কোন ক্ষমতা থাকে না বলেও মন্তব্য করেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটাকে যেভাবে কুক্ষিগত করা হয়েছে তাতে নির্বাচন কমিশনের ব্যাসিকালি কোন ক্ষমতা নাই। তাদের কোন জনবল নাই, তারা প্রশাসনের উপর নির্ভর করে। প্রশাসনও সরকারের আজ্ঞাবহ থাকে, কারণ সংবিধানের ৪৮ এর ‘গ’ ধারা অনুযায়ী এই দেশের একমাত্র ক্ষমতার মালিক প্রধানমন্ত্রী। সিইসির সচিবের বক্তব্য আপনারা শুনেছেন, তার বক্তব্যে কী মনে হয় দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হইছে? তিনি তো বলছেন, ডিসিদের কাছে তো ম্যাসেজ চলে গেছে। সিইসি থেকেই সব প্রকাশ পেয়ে গেছে।’
তৃণমূল বিএনপি রাজপথে থাকবে জানিয়ে তৈমুর বলেন, ‘নাহলে দেশের যেই নির্বাচনী ব্যবস্থা এই ব্যবস্থায় আমরা আর টিকে থাকতে পারবো না।’