রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানিতে আগুন লেগে ৫২ জন নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজমসহ একটি প্রতিনিধি দল।
রবিবার (১১ জুলাই) দুপুরে আওয়ামী লীগের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি এমপি, আব্দুল ওহাব অপু এমপি, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য শামীম আহমেদ প্রমুখ।
এ সময় তিনি বলেন, এমন অগ্নিকাÐ যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। এ দুর্ঘটনার জন্য মালিকপক্ষের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন সংস্থা যেমন কলকারখানা অধিদফতর, শ্রম অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস, রাজউকসহ যাদেরই এ প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে গাফিলতি রয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এসময় তাদের সঙ্গে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং রূপগঞ্জ আসনের এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান ভূইয়া, লায়ন মো. মাহবুবুর রহমান বাবুলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মীর্জা আজম এমপি এসময় আরও বলেন, বিল্ডিং কোড না মানা, ফায়ার সেফটির ব্যবস্থা না করার কারণে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দুর্ঘটনার সঙ্গে যারই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাকেই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ কারখানায় যদি শিশু শ্রমিক থেকে থাকে, তদন্ত সাপেক্ষে এসব শিশু শ্রমিককে কারা নিয়োজিত করেছিল তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। সরকার এর মধ্যে নিহতের পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর্থিক সহায়তা করেছে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। এর পরেও যদি অতিরিক্ত সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে সহযোগিতাও করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। ওই সময় কারখানা ভবনটিতে প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের দীর্ঘ সময় লাগে।
আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পর শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুর সোয়া একটা পর থেকে কারখানার ভেতরে থেকে লাশ বের করে আনতে থাকেন উদ্ধারকর্মীরা। এসময় ৪৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এরআগে, আগুনে নিহত তিন জনের লাশসহ মোট ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়। কারখানায় আগুনের ঘটনায় আরও অনেক শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। ঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।