বিশ্বের দরিদ্রতম দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাচ্ছে ভুটান। আগামী ১৩ ডিসেম্বর সপ্তম দেশ হিসেবে শিল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হবে হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত দেশটি।
বৃহস্পতিবার দোহায় শেষ হওয়া এলডিসি শীর্ষ সম্মেলনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা একে অনেক সম্মান ও গর্বের সাথে নিচ্ছি, আমরা ভীত নই।’
ভুটান ছাড়া বর্তমানে এলিডিসিভুক্ত দেশের সংখ্যা ৪৫। এলডিসির তালিকা থেকে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ, নেপাল, অ্যাঙ্গোলা, সলোমোন দ্বীপপুঞ্জ এবং সাও টোমির উত্তরণ ঘটতে পারে। তবে এলডিসি থেকে বের হয়ে যাওয়ার তিন বছর পর বাণিজ্য অগ্রাধিকার এবং সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে এই দেশগুলোকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা উদ্বিগ্ন এই দেশগুলো। ইতিমধ্যে অ্যাঙ্গোলা ও সলোমোন দ্বীপপুঞ্জ তাদের উত্তরণ প্রক্রিয়া নিজেরাই আবেদন করে স্থগিত করেছে। কোভিডের প্রভাবে দেশ দুটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমেছে।
ভুটান ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এর বার্ষিক গড় জিডিপি এই সময়ে ৫ শতাংশের বেশি ছিল। দেশটির আমদানি-রপ্তানির ৮০ শতাংশই ভারতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। গত এক দশকে ভুটান তার সমষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে। একই সময়ে দেশটির
দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০০৭ সালে দেশটিতে দৈনিক ৩ দশমিক ২০ ডলার উপার্জনকারী মানুষের হার ৩৬ শতাংশ হলেও ২০১৭ সালে তা ১২ শতাংশে নেমে আসে।
কিন্তু করোনভাইরাস মহামারি এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি দেশটিকে তার ব্যয় বাড়াতে বাধ্য করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে ভুটান সরকার গত বছর বিদেশি গাড়ি আমদানি নিষিদ্ধ করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেন, ‘জীবন মানেই অভিযোজন। এটি হারানো এবং লাভ করা সম্পর্কে। আপনি একটি হারাবেন, আরেকটি অর্জন করবেন। আমি মনে করি, আমরা কিছু অনুদানের প্রাপ্যতা হারাতে যাচ্ছি। তবে আমরা আরও ব্যবসার সুযোগ বা আরও বিনিয়োগ আনার সুযোগ পাব। এটি খেলার একটি কৌশল মাত্র।’