আইপিএলের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের মুখোমুখি হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
জিতলে দল নাম লেখাবে আইপিএলের ফাইনালে। খেলবে মাহেন্দ্র সিং ধোনির দল চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে। আর হারলে এবারের মতো বিদায়।
এমন সমীকরণে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে নিয়েই বুধবার রাতে শারজায় মাঠে নামেন কলকাতা অধিনায়ক ইয়ন মরগান।
আর টসে হেরে কলকাতার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ১৩৫ রানের সল্প পুঁজি পায় দিল্লি। এক কথায় টি-টোয়েন্টির এই ধুমধাড়াক্কা ম্যাচে এটি সহজ লক্ষ্য।
আর এই সহজ লক্ষ্যের ম্যাচ খুব কঠিন করে জিতল কলকাতা। শেষ ওভারে এক বল বাকি থাকতে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন রাহুল ত্রিপাথি।
তবে কলকাতার দু্ই ওপেনার শুরুর দিকে ভালো না খেললে হয়ত হাসি ফুটত না সাকিবদের মুখে। ১৩৬ রানের সহজ লক্ষ্যের তাড়ায় অনেকটা পথ হেসেখেলেই পার করে দিয়েছেন শুবমান গিল ও ভেঙ্কাটস আইয়ার।
১২.২ ওভার পর্যন্ত খেলে উদ্বোধনী জুটি সংগ্রহ করেন ৯৬ রান। ওভারের দ্বিতীয় ও কাগিসো রাবাদার তৃতীয় বলে আউট হওয়ার আগে ৪১ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রান যোগ করেন ভেঙ্কাটস। জয়ের জন্য ৫২ বলে দরকার পড়ে ৪০ রান। হাতে ৯ উইকেট।
তবে বাকি লক্ষ্য পূরণে টপ ও মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখাতে পারেনি। উল্টো হারের আশঙ্কায় ডুবিয়েছেন। ভেঙ্কাটসের পরে নামা নিতিশ রানা ১৩ রান করেই সাজঘরে ফেরেন।
দলের দুই সিনিয়র দিনেশ কার্তিক ও অধিনায়ক মরগান রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ব্যাট হাতে নেমেই রাবাদার বলে বোল্ড হন কার্তিক। গোটা আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলোর মতো ব্যাটিং ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন মরগানও।
নরজের বলে ডাক মারেন তিনি। অধিনায়কের পথ অনুসরাণ করেন গত ম্যাচের মি. ফিনিশার সাকিব আল হাসানও।
১৮ বল বাকি থাকতে জয়ের জন্য কলকাতার প্রয়োজন পড়ে ১১ রান। হাতে ছিল ৭ উইকেট। দলের স্কোর ৩ উইকেটে ১২৫
কিন্তু ১৯তম ওভারে গিয়ে স্কোর দাঁড়ায় ১২৯ রান ৫ উইকেটে। ৪ রান করতেই ২ উইকেট হাওয়া।
শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ৭ রানের। ৩ বলেই সাকিবকে ফেরান অশ্বিন। পরের বলে নারিনকে আউট করেন শূন্য রানেই।
অর্থাৎ এক ম্যাচেই কলকাতার চার ব্যাটার ডাক মারলেন!
১৩৫ রানের মামুলী পুঁজি নিয়েও শেষ ওভারে টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে দেন অশ্বিন।
শেষ দুই বলে কলকাতার প্রয়োজন পড়ে ৬ রান। এদিকে হ্যাটট্রিকের আশায় বল ছুড়েন অশ্বিন। সেই বলকেই বোলারের উপর দিয়ে ছক্কা হাঁকান রাহুল ত্রিপাতি। এক বল বাকি থাকতে পৌঁছে যান জয়ের বন্দরে।
টানটান উত্তেজেনার ম্যাচে ৩ উইকেটে জয় নিয়ে আইপিএল -২০২১ এর ফাইনালে উঠল শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্স।
এর আগে টসে জিতে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ব্যাটিংয়ে পাঠান কলকাতার অধিনায়ক মরগান।
আর মরগানের বোলিং নেওয়ার পরিকল্পনাকে সফল করে কলকাতার বোলাররা।
বরুণ, শিভাম ও সাকিবদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ১৩৫ রানের সল্প পুঁজি পায় দিল্লি।
দিল্লির দুর্দান্ত ওপেনার পৃথ্বি শকে আজ ১৮ রানেই থামিয়ে দেন পেসার বরুণ চক্রবর্তী। অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান উইকেটে থিতু হয়ে গেলেও সাকিবের তালুবন্দি হয়ে ৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন শিখর। এই গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটিও নিয়েছেন বরুণ।
দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে মার্কুস স্টইনিরে উইকেটে ভেঙে দেন শিভাম। পৃথ্বির সমান ১৮ রান যোগ করতে পারেন তিনি।
দলের সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য ব্যাটার অধিনায়ক ঋষভ পন্তকে মাত্র ৬ রানেই সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন পেসার ফার্গুসন।
ক্যারিবীয় হার্ডহিটার হেটামায়ারকে ১৭ রানে রানআউট করলে লড়াকু পুঁজি পায়নি দিল্লি।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৫ রানের সল্প পুঁজি নিয়ে মাঠ ছাড়ে দিল্লি। ২৭ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়াস আইয়ার।
ম্যাচে ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে দুটি উইকেট পেয়েছেন বরুণ। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শিভাম ও ফার্গুসন।