যুদ্ধ চলছে ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে। আর সেই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে দেশের ভোজ্যতেলের ওপর। যেকোনো সময় তেলের দাম আরও বাড়তে পারে এবং নিত্যপণ্যের সংকট হতে পারে এমন শঙ্কায় নারায়ণগঞ্জে শুরু হয়েছে তেল নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যেই স্থানীয় বাজারগুলোতে কৃত্রিম সংকটের প্রভাবে হু হু করে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম। বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যাচ্ছে। ফলে অভিযোগ পেয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা।
সোমবার (৯ মে) বেলা ১১টা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫নং ওয়ার্ডের নিতাইগঞ্জ কেরসিন ঘাট এলাকায় বিভিন্ন তেলের গোডাউনে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় ব্যবসায়ীদের মজুত করা তেল সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করার জন্য বলা হয়। যদি কেউ বর্ধিত দামে বিক্রি করে তাদরে বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন গোডাউনে আগের মজুদ করা তেল পূর্বের দামেই বিক্রি করার নির্দেষ দেয়া হয়েছে, যদি কেউ বেশী দামে বিক্রি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিতাইগঞ্জে তেল ব্যবসায়ী মনির স্টোরের মালিক মো. মনির হোসেন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমাদের কাছে প্রতিদিন তেল আসছে, আমরা সেটি প্রতিদিন বাজারে সেল করে দিচ্ছি। কোন তেল মজুদ করে দীর্ঘদিন রাখছি না। আমাদের কাছে আগের দামে যে তেল গুলো আছে সেগুলো আগের দামেই বিক্রি করছি।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দামে আমরা তেল বিক্রি করছি। প্রতি ৫ লিটার তেল ৯শ’ ৬৫টাকা দরে বিক্রি করছি। পূর্বে ৫ লিটার তেলের মূল্য ছিল ৭শ’ ৬০টাকা। এখন আমাদের বেশী দামে কিনতে হচ্ছে, বেশী দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে আমাদের ভোক্তা অধিদপ্তরের একটি টিম নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। যদি কেউ তেল মজুদ করে রাখে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিবো। আমরা দুটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি সেখানে গতকাল ১লাখ লিটার খোলা তেল মজুদ করেছে, এবং আজ তারা বাজারে বিক্রি করছে। সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৮ হাজার ৪শ’ লিটার বোতলজাত তেল মজুদ আছে, নতুন দামে বাজারে এসেছে। তবে বর্তমান বাজারে কোন তেলের সংকট নেই।
তিনি আরও জানান, আজকের অভিযানে আগের দামে ৫শ’ ৪০ লিটার তেল পাওয়া গেছে। আমাদের উপস্তিতিতেই ১শ’ ৫৬টাকা লিটার বিক্রি হয়েছে। দিগু বাবুর বাজারে ১শ’ ৬০টাকা দরেই বিক্রি হবে ওই তেল। আমাদের মেসেজ হলো, যদি কেউ আগের দরে তেল কিনে আগের দরে বিক্রি না করে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে। কেউ জাতে তেল মজুদ করে রাখতে না পারে সেজন্য আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে। আপনাদের কাছে কোন তথ্য থাকলে আমাদেরকে অবগত করবেন আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
মো. সেলিমুজ্জামান বলেন, আমরা নিতাইগঞ্জে তেলের মজুদের পাশাপাশি সঠিক দ্রব্যমূল্যের মূল্য তালিকা ঠিক আছে কিনা সেটিও অভিযান পরিচালনা করেছি। নিতাইগঞ্জে কেরসিন ঘাট এলাকায় ‘সেলিম স্টোর’ নামক এক প্রতিষ্ঠানকে দ্রব্যমূল্যের তালিকা সঠিক না থাকায় ও সঠিক তারিখ না থাকায় ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ সময় গোয়েন্দা সংস্থার একটি টিম, কৃষি উন্নয়নের প্রতিনিধি ও জেলা পুলিশের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন।