মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন ভারতের সদ্যসাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আসানসোল থেকে নির্বাচিত বিজেপির এমপি বাবুল সুপ্রিয়। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তিনি দলবদল করেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্তান টাইমসের।
বাবুল সুপ্রিয়র যোগদানের ছবিসহ নিখিল ভারত তৃণমূল কংগ্রেসের টুইটার হ্যান্ডলে শনিবার এক বার্তায় জানানো হয়েছে, ‘আজ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার এমপি ডেরেক ও’ব্রেইনের উপস্থিতিতে লোকসভার এমপি ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূল পরিবারে যোগ দিয়েছেন।’
সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদল করলে মন্ত্রিত্ব খোয়ান বাবুল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ্য করেন মোদি মন্ত্রিসভার দুই বারের মন্ত্রী। রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে এমপি পদ ছাড়ার কথাও জানান। উদ্যোগী হয়ে ওঠে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাবুলের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। কিন্তু এতেও লাভ হলো না।
ওই বৈঠক থেকে বেরিয়ে বাবুল সুপ্রিয় জানান, তিনি রাজনীতি ছাড়লেও এমপি পদ ছাড়ছেন না। আরও বলেছিলেন, তিনি অন্য কোনো দলে যোগ দেবেন না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন কাটতে না কাটতেই চমক দিলেন বাবুল। দীর্ঘদিন পরে যখন প্রকাশ্যে এলেন, তখন গলায় তৃণমূলের উত্তরীয়। তার এই দলবদলকে ‘আচমকা’ বলছে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা।
বাবুল সুপ্রিয় ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল আসন থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। ওই বছর মোদির মন্ত্রিসভায় নগরোন্নয়ন, আবাসন ও শহুরে দারিদ্র বিমোচন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৬ দফতর পরিবর্তন করে ভারী শিল্প ও জনউদ্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয় তাকে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি পুনরায় পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের মুনমুন সেনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে বিপুল ব্যবধানে তৃণমূল কংগ্রেসের অরূপ বিশ্বাসের কাছে টালিগঞ্জ আসন থেকে পরাজিত হন।
বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর সঙ্গীতশিল্পী থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া বাবুল সুপ্রিয়কে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মন্ত্রিত্ব হারানোর ক্ষোভে সঙ্গে সঙ্গেই রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন বাবুল সুপ্রিয়। পরে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টাও করেছিলেন। তবে তা সফল হয়নি।