প্রতিবেশী ইউক্রেনের ন্যাটো জোটে যোগদান ঠেকানো ঘিরে সৃষ্ট তীব্র উত্তেজনার মাঝে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের মহড়া চালিয়েছে রাশিয়া। শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক এই মহড়া পর্যবেক্ষণ করেছেন।
ক্রেমলিন বলেছে, ‘পরিকল্পিত মহড়ার’ অংশ হিসেবে শনিবার হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল মহড়া চালিয়েছে রাশিয়া।
এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন বলছে, সব ক্ষেপণাস্ত্র তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। এর মাধ্যমে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যে আঘাত হানার সক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বার্ষিক এই মহড়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছেন পাশের দেশ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্দ্রো লুকাশেঙ্কো।
মহড়ায় কিনঝাল ও সিরকন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বেশ কিছু অন্যান্য অস্ত্রের মহড়া চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। মস্কো এমন এক সময় এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল যখন ওয়াশিংটন বলছে, সীমান্তে অবস্থান করা রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনে হামলা চালাতে প্রস্তুত।
ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া এক লাখ ৯০ হাজারের বেশি সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম সমাবেশ করায় স্নায়ুযুদ্ধের পর পূর্ব ইউরোপে এবারই সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, সাবেক সোভিয়েত প্রতিবেশী ইউক্রেনের সীমান্তের আরও কাছে যেতে শুরু করেছে রাশিয়ার সৈন্যরা।
ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয় সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপত্যবাদবিরোধী।
ইউক্রেনে আক্রমণ অনিবার্য নয় উল্লেখ করে লিথুয়ানিয়া সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আমরা আশা করছি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংঘাতের কিনারা থেকে ফিরবেন।
এদিকে, পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়া সীমান্তের কাছে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গোলার আঘাতে ইউক্রেনের এক সৈন্য নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে। যুদ্ধের তীব্র শঙ্কার মাঝে শনিবার সকালের দিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ওই সৈন্য নিহত হয়েছেন।
দুই মাসের বেশি সময় ধরে দুই দেশের সীমান্তে চলা উত্তেজনার মাঝে শনিবারের এই হামলার পেছনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।