টিকটক ভিডিও করা নিয়ে সুনামগঞ্জের ছাতকে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক যুবক নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার সুরমা ব্রিজের গোল চত্বর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভাসখালা ও কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
নিহত সাইফুল ইসলাম (৩৫) মুক্তিরগাঁও গ্রামের চমক আলীর ছেলে। রাতে ছাতক ও দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত মামুন ও সজিবকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্জাক, জসিম, কুটিলাল ও আফতাব উদ্দিনসহ আহত আরও কয়েকজনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ৮টার দিকে সুরমা ব্রিজের গোল চত্বর এলাকায় দুই তরুণ-তরুণী টিকটক ভিডিও করছিলেন। এ সময় তাদের বাধা দেন ভাসখালা গ্রামের আহাদ মিয়ার ছেলে রাজ্জাক, আহমদ আলীর ছেলে মান্নাসহ তাদের সহযোগীরা। এ নিয়ে মুক্তিরগাঁও গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে মামুনের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে মামুনকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। চার ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হন।
সংঘর্ষ চলাকালে ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় গোল চত্বর এলাকার বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। পাশাপাশি একটি পিকআপভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। ছাতক থানা পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয়েছে। দোয়ারাবাজার থানা পুলিশসহ পুলিশের একাধিক ইউনিট সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করেছে। ঘটনাস্থলে বর্তমানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ছাতক সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রনজয় চন্দ্র মল্লিক বলেন, সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহারের পরিসংখ্যান এই মুহূর্তে সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।