রুদ্রবার্তা২৪.নেট: জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে আড়াইহাজার উপজেলা অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন। গত জুন ও জুলাই মাসের সার্বিক ফলাফলে আড়াইহাজার উপজেলা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সারা বাংলাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। মূলত বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এ জেলায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের নারায়ণগঞ্জ মডেল চালু করেন।
এ মডেলের আওতায় জনগণের বাড়ী বাড়ী গিয়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধণের তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে পৌরসভা- ইউনিয়ন পরিষদগুলোর স্ব উদ্যোগে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন করে সনদ বাড়ী পৌছে দেওয়া হয়। গত জুলাই মাসে শুধু আড়াইহাজার উপজেলায় ১হাজার ৯শ ২৬ টি জন্ম নিবন্ধন সনদ ও ১শ ১৮ টি মৃত্যু নিবন্ধন সনদ জনগনের বাসায় পৌছে দেওয়া হয়েছে।
জুন ও জুলাই মাসের সার্বিক ফলাফলে আড়াইহাজার উপজেলা সারা বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এ তথ্যটি নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে “নারায়ণগঞ্জ মডেল” একটি পরীক্ষিত ও কার্যকরী মডেল, এর মাধ্যমে আমরা জনসংখ্যার সঠিক তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে কার্যকরী পরিকল্পণা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারব।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বলেন, সঠিকভাবে জন্ম নিবন্ধন অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। জনকল্যাণমুখী নীতিমালা প্রণয়ন এবং সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিধি মোতাবেক সঠিক জন্ম তারিখ সম্বলিত একটি জন্ম সনদ নাগরিকের জন্য অপরিহার্য।
সঠিক জন্ম তারিখ সম্বলিত জন্মসনদ একজন মানুষের রাষ্ট্রীয় অধিকার এবং নাগরিক হিসেবে অত্যন্ত সম্মানের একটি দলিল। জন্ম ও মৃত্য নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন) এ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনকে সার্বজনীন ঘোষণা করে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিবন্ধকের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
জানা গেছে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে সারাদেশের চিত্র আশাব্যাঞ্জক নয়। নারায়ণগঞ্জ এর অবস্থা আরো নাজুক ছিলো। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের পূর্বেও নারায়ণগঞ্জ এর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধনের হার ছিলো ২% এবং মৃত্যু নিবন্ধনের হার ছিলো ০.০৭% এবং এক বছরের মধ্যে এ হার ছিলো ১৩% ও ০১% এর কম।
বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এ জেলায় যোগদানের পর পরেই জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাজে গ্রাম পুলিশদের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জে প্রবর্তন করেন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের “নারায়ণগঞ্জ মডেল”।
এ মডেলের আওতায় নারায়ণগঞ্জের সকল উপজেলায় গ্রাম পুলিশের সকল শুন্য পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। গ্রাম পুলিশদের ১০ দিনের প্রশিক্ষণ ও সকলকে বাইসাইকেল প্রদান করা হয়। পৌরসভায় এ কাজের জন্য তাদের কর্মচারীগণের মধ্য হতে ৯ ওয়ার্ডে ৯ জনকে বিশেষ দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
তাদেরকেও একইভাবে প্রশিক্ষণ ও বাইসাইকেল সরবরাহ করা হয়। সকল সদস্য প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে রেজিস্টার প্রদান করে বাড়ী বাড়ী গিয়ে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধণের তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে পৌরসভা- ইউনিয়ন পরিষদগুলো স্ব উদ্যোগে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন করে সনদ বাড়ী পৌছে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সোহাগ হোসেন জানান, আমরা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের “নারায়ণগঞ্জ মডেল” বাস্তবায়নে সংসদ সদস্য, পৌরসভার মেয়র-ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিব, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে সভা করে অভীষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে কর্মপন্থা নির্ধারণ করি।
গ্রাম পুলিশ ও পৌরসভার নির্বাচিত কর্মচারীদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ কওে নিবন্ধন সম্পন্ন করে সনদ বাড়ী পৌছে দিচ্ছি। আমরা সকলের সহযোগিতায় সদ্য জন্মগ্রহনকারী শিশুর অভিভাবকদের অভিনন্দন বার্তা, মৃত্যুবরণকারী পরিবারের সদস্যদের শোকবার্তা প্রেরণ করে থাকি। চলতি মাসেই আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উদ্যোগে নবজাতক শিশুদের জন্য বেবি ডায়পার সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, মূলত: এ অর্জন টিম আড়াইহাজারের, সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে আমরা সামনের দিনে জনগণকে কাঙ্খিত সেবা পৌছে দেয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাবো।