সৌদি আরবের বিপক্ষে হার দিয়ে আসর শুরু। সবকিছুই যেন বদলে গেল এই এক হারে।
টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এসেছিল আর্জেন্টিনা, তা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এমনটা ভেবেছিলেন অনেকেই।
কিন্তু গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচ যারা দেখেছেন তারা এখন আর্জেন্টিনাকে আবারও শিরোপা প্রত্যাশী দলের কাতারে নিয়ে আসতে বাধ্য। মেক্সিকোর পর পোল্যান্ডকেও পাত্তা দিল না আলবিসেলেস্তেরা।
স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ ২-০ গোলের জয়ে সি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় পা রাখে লিওনেল স্কালোনির দল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে তারা। শেষ ষোলোয় উঠেছে পোল্যান্ডও। মেক্সিকোর সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও গোলগড়ে এগিয়ে আছে তারা।
হারলেই বিদায় এমন সমীকরণ নিয়েই মাঠে নামতে হয় আলবিসেলস্তেদের। তাই খেলার শুরু থেকেই দেখা মিলে আগ্রাসী আর্জেন্টিনার। বল বারবারই দেখা যাচ্ছি পোল্যান্ডের দুর্গে। কেননা গোলের উদ্দেশ্যে একের পর এক আক্রমণ সাজান লিওনেল মেসি-দি মারিয়া। কিন্তু জালের ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। বাধা হয়ে দাঁড়ান পোল্যান্ডের গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি। কাতার বিশ্বকাপে আগেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। আজ বুঝিয়ে দিলেন কেন তার ওপর আস্থা রাখে পোল্যান্ড। মেসিকে বারবার হতাশায় ডুবিয়েছেন তিনি।
ম্যাচের ১০ মিনিটে গোলের উদ্দেশ্যে জোরালো শট নেন মেসি। তার বাঁ পায়ের সেই শট অনায়াসে ঠেকিয়ে দেন সেজনিই। ৩৩ মিনিটে আনহেল দি মারিয়ার কর্নার কিক হাওয়ায় দারুণ ভাবে বাক জালে ঢুকে গেছিল প্রায়। কিন্তু সেজনির হাত তা হতে দেয়নি। সেই হাতেই ৩৬ মিনিটে মেসিকে ডি বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন তিনি। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু খলনায়ক থেকে মুহূর্তের মধ্যে নায়ক বনে যান সেজনি। স্পট কিক থেকে নেওয়া মেসির শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ডান হাত দিয়ে ঠেকান এই পোলিশ গোলরক্ষক। কিন্তু বিরতির পর সেই ধার আর ধরে রাখতে পারেননি।
অনেক চেষ্টার পর ৪৬ মিনিটে গোলের ডেডলক ভাঙে আর্জেন্টিনা। ৪৬ মিনিটে মেসির বুক থেকে পাথর নামিয়ে দেন আলিস্তার। মলিনার ক্রস বাঁ প্রান্তে নিচু কর্নার দিয়ে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
দ্বিতীয় গোলটির জন্য কেবল ২১ মিনিট অপেক্ষায় থাকতে হয় আর্জেন্টিনাকে। এনসো ফার্নান্দেসের পাস থেকে বিপদের শঙ্কাটা অনেকটাই দূর করে দেন হুলিয়ান আলভারেসের। মেসি গোলবঞ্চিত থাকলেও পুরো মাঠজুড়ে তার দাপট ছিল দেখার মতো। অন্যদিকে পোল্যান্ডের সেরা তারকা রবের্ত লেভানদোভস্কির বলে স্পর্শ করার সংখ্যা গুনে বলতে পারবেন দর্শকরা। কেননা আক্রমণে উঠার সেই সুযোগই পায়নি পোলিশরা। গোলমুখে কোনো শটই নিতে পারেনি। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার শট ছিল ১২টি। সেটাই বলে দেয় আর্জেন্টিনার আধিপত্য কেমন ছিল।