ফতুল্লার বক্তাবলীতে আলমগীর নিহতের ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মহসিন ও তোফাজ্জল ম্যানেজার। মঙ্গলবার(২২ মার্চ) রাতে তাদের কে ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আলমগীর নিহতের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মিনু আক্তার(৩২) বাদী হয়ে বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওমর ফারুকসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ্য করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামী করা হয়েছে কাউছার(৩৫), ইউপি সদস্য ওমর ফারুক(৪৫), হাজী আব্দুল আলী(৬০), তোফাজ্জল ম্যানেজার (৪৮), শরিফ(৪৫), শাহিন(৪৬), পাভেল(১৮), ইমান(৩২), মজিবুর(৩৫), স্বপন(৩৮), জাহেদআলী(৪২), আনোয়ার(৩৫), মতিন(৩২), মহসিন(৩০), জিহাদ(২৮), সিদ্দিক(৪৫), সজিব(৩০) ও হিমেল(২৬)।
মামলায় উল্লেখ্য করা হয়, নিহত আলমগীরের সাথে বক্তাবলী লক্ষীনগর পূর্ব পাড়া নদীর তীরের তিশা ব্রিক ফিল্ডের মালিক হাজী আব্দুল আলী ও মারুফা ব্রিকস্ ফিল্ডের মালিক ইউপি সদস্য ওমর ফারুকের পূর্ব শত্রুতা ছিলো। এর জের ধরে সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা দিকে অভিযুক্তরা আলমগীর কে হাজী আব্দুলের মালিকানাধীন তিশা ব্রিক ফিল্ডস্ ও ইউপি সদস্য ওমর ফারুকের মালিকানাধীন মারুফা ব্রিক ফিল্ডের মাঝামাঝি জায়গায় একা পেয়ে লেহার রড, রামদা, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে-পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সংবাদ পেয়ে বাদী ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের কবল থেকে তার স্বামী কে রক্ষা করতে হাতে পায়ে ধরে অনুরোধ করে। তখন হামলাকারীরা রক্তাক্তবস্থায় আলমগীর কে টেনে হিচড়ে রাজাপুর চৌরাস্তায় নিয়ে আসে।
এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আলমগীরকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পরে সেখান থেকে লালমাটিয়াস্থ প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসারতবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে আলমগীর মারা যায়।
অপরদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদরা জানান, ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য ফারুক মেম্বারের সঙ্গে আলমগীরের পূর্ব বিরোধ ছিলো। সেই বিরোধের জের ধরে সোমবার সকালে রাজাপুর এলাকায় আব্দুল আলীর মালিকানাধীন ঈশা ব্রিকফিল্ডের কাছে একটি মুদি দোকানে আলমগীর ও ফারুক মেম্বারের মধ্যে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে ফারুক মেম্বারের মাথায় কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে আলমগীর। এসময় দূর থেকে দেখে ফারুক মেম্বারের মালিকানাধীন মারুফা ব্রিকফিল্ড থেকে শ্রমিকরা এগিয়ে এসে আলমগীর হোসেনকে গণধোলাই দেয়। তখন আলমগীরের লোকজনও খবর পেয়ে এগিয়ে এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করলে তাৎক্ষনিক পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর ফারুক মেম্বার ও আলমগীর হোসেনকে দ্রুত হাসপাতালে প্রেরন করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দত্ত জানান, মামলার এজাহার নামীয় আসামী মহসিন ও তোফাজ্জলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের কেও গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নিহত আলমগীর ফতুল্লার লক্ষীনগর এলাকার হযরত আলীর ছেলে। নিহতের বিরুদ্ধে হত্যা,পুলিশকে ছুরিকাঘাত সহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।