নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট (খানপুর) হাসপাতালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের আয়োজনে অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনাস্থলে করণীয় বিষয়ে মহড়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. মো. আবুল বাশার বলেন, আজকে ফায়ার সার্ভিসের মহড়া থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ভবিষ্যতে ঘরে বাইরে কর্মক্ষেত্রে এটা সকলেরই প্রয়োজন হতে পারে। যেকোন অগ্নিকাণ্ডে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। এজন্য আজকে আমরা যা শিখলাম সেটা কাজে লাগাতে হবে। কয়েকদিন আগে আমাদের হাসপাতালে বিদ্যুতের সুইচ বোর্ড থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। যে কক্ষটিতে আগুন লেগেছিল সেখানে আমাদের অনেক মূল্যবান সামগ্রী রাখা ছিল। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই আমাদের কর্মীরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। নয়তো বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতো।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ রয়েছে। তার বিপরীতে ফায়ার সার্ভিসের জনবল মাত্র ১৩ হাজার। এই স্বল্প সংখ্যক মানুষ দিয়ে কিন্তু সবাইকে পরিপূর্ণ সেবা দেয়া সম্ভব না। একটি ভবন তৈরিতে কয়েক বছর লেগে যায়। অথচ সেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ভবনটি ভস্মীভূত হয়ে পড়তে পারে। এজন্য আমাদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি ি আগুন নেভাতে প্রাথমিকভাবে কি করণীয় সেটা জানতে হবে। হাসপাতাল একটি স্পর্শকাতর স্থান। এখানে আগুন লাগলে রোগীদের কিভাবে বের করে আনতে হবে সেটা জানতে হবে। আগুন লাগলে ধোঁয়ার কারণে রোগীদের সমস্যা হয়। এ কারণে রোগীদের ফ্লোর লেভেলে (নিচু) বের করে আনতে হবে। কারণ ধোঁয়া ফ্লোর লেভেলের এক থেকে দেড় ফুট উঁচুতে থাকে। তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু হাসপাতাল নয় বিভিন্ন বহুতল ভবন, কারখানা, মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে করণীয় সম্পর্কে মহড়া করে যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জে ২০ তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণে যে গাড়ি প্রয়োজন সেটাও আমাদের কাছে আছে। আমাদের কোন যন্ত্রাংশের স্বল্পতা নেই। আমাদের প্রয়োজন সতর্কতার। ফায়ার সার্ভিস খবর পেলেও তৈরি হয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু দুর্ঘটনাস্থলে থাকা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকজন থাকলে তারা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হবে। এজন্যই আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি এবং এটা অব্যাহত থাকবে।
এর আগে মহড়ায় দেখানো হয় হাসপাতালে আগুন লাগলে কিভাবে রোগীদের হাসপাতাল থেকে বের করে আনতে হবে। কিভাবে তাদেরকে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে। এছাড়াও বসতবাড়িতে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতলের আগুন কিভাবে নেভাতে হবে সে বিষয়েও সরেজমিনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পাশাপাশি যেকোন আগুন কিভাবে প্রাথমিকভাবে ভেজা কাপড় দিয়ে ও ফায়ার এক্সটিংগুইসার দিয়ে নেভাতে হয় সেটাও শেখানো হয়।
এসময় নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আরপি ডা. দেবরাজ মালাকারসহ ওই হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।