গত দু’বছর ধরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে দেশটির বিরোধী দলগুলো; ঘনিয়ে আসছে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে তার বিরুদ্ধে আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা ভোটের দিনও।
কিন্তু ইমরান খান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বিরোধীদের অনাস্থা ভোটের প্রস্তাবে পদত্যাগের জন্য একেবারেই প্রস্তুত নন তিনি। বুধবার রাজধানী ইসলামাদে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করব না। আমি শেষ বল পর্যন্ত খেলব এবং তাদের (বিরোধীদের) চমকে দেব। আমি জানি, তারা চাপে আছে।’
গত ৯ মার্চ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলীয় এমপিরা অ্যাসেম্বলির সচিবালয়ে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব জমা দেন। তাদের সেই প্রস্তাব আমলে নিয়ে আগামী ২৫ মার্চ অনাস্থা ভোটের দিন ধার্য করেন অ্যাসেম্বলির স্পিকার আসাদ কায়সার।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টারি নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ২৫ মার্চ থেকে পরবর্তী সাত দিনে তিন ধাপে অনাস্থা ভোট হবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে ইমরান খান দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ট্রাম্পকার্ড হলো, আমি আমার কোনো কার্ড গোপন রাখিনি।’
‘তাই কেউ যদি ভেবে থাকেন যে (অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ার ভয়ে) পদত্যাগ করে আমি ঘরে বসে থাকব, সেক্ষেত্রে তিনি বিভ্রান্তির মধ্যে আছেন। আমি পদত্যাগ করব না।’
‘আর কেন আমি (পদত্যাগ) করব? চোরের দল দাবি তুলেছে বলেই পদত্যাগ করতে হবে?
পাকিস্তানের বিরোধীরা বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন, সামরিক বাহিনীর মদতে ক্ষমতায় টিকে আছেন ইমরান খান। ইমরান অবশ্য বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনেও তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীকে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করা উচিত নয় বিরোধীদের।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি সামরিক বাহিনী না থাকত, এই দেশ এতদিনে অন্তত তিন ভাগে ভাগ হয়ে যেত। সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করা বা একে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে বিবেচনা করার অভ্যাস আমাদের পরিবর্তন করা উচিত।’
বিরোধীদের উদ্দেশে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যদি কোনো কারণে তাকে ক্ষমতাচ্যুত হতেও হয়, তাহলেও নীতির সঙ্গে আপস করবেন না; কারণ দেশের জনগণ ও স্রষ্টার কাছে তিনি দায়বদ্ধ।
‘আমার নেতৃত্বাধীন সরকার যদি কোনো কারণে পড়েও যায়, তবুও আমি নিজের নীতির সঙ্গে আপস করব না। কারণ, আমি দেশের জনগণ ও স্রষ্টার সঙ্গে বেঈমানি করতে পারি না।’
‘জনগণ আমার সঙ্গে আছেন। দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আমাকে ও আমার দলকে সমর্থন করে।’