শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

এলাকাবাসীর দাবি ১৪ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলার হিসাবে মনিরকে দেখতে চাই

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১, ৯.১৩ এএম
  • ৫৮২ বার পড়া হয়েছে

# এ ওয়ার্ডে নতুন কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি: সাবেক কাউন্সিলর মনির # আবার নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজ করবো- শফিউদ্দিন প্রধান

রুদ্রবার্তা রিপোর্ট : দেওভোগ ওয়েস্ট রোড, শের-এ বাংলা রোড, জিউস পুকুরপাড়, ভূইয়ারবাগ, ডিএন রোড, নন্দী পাড়া ও বঙ্গবন্ধু রোডের পশ্চিমাংশের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ড। প্রায় ১.২৭ বর্গ কিলোমিটার আয়োতনের এ ওয়ার্ডের মোট জনসংখ্যা (বি.বি.এস- ২০১১ অনুযায়ী) ২৯ হাজার ৪’শ ৩১জন।
বর্তমানে এ ওয়ার্ডটিতে রয়েছে নানা সমস্যা। এর মধ্যে ওয়ার্ডবাসীর প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে মশা। এখানে মশার উপদ্রব এতটাই বেশি যে, মশারি টাঙ্গিয়েও নিস্তার পাচ্ছেন না ওয়ার্ডবাসী। রাতের ঘুম রীতিমত হারাম করে দিচ্ছে মশা।
এ নিয়ে ওয়ার্ডবাসীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, বর্তমানে এমনিতেই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে আছি। আর এর মধ্যে যোগ হয়েছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক। এখানে মশার উপদ্রব এতটাই বেশি যে, কে কখন মশার কামড়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হই তা নিয়েই ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। মশার জন্য ছেলে- মেয়েদের লেখাপড়াসহ রাতে একটুও ঘুমানো যাচ্ছেনা। মশারি কিংবা মশার কয়েল জ্বালিয়েও নিস্তার পাওয়া যাচ্ছেনা মশার যন্ত্রণা থেকে।
‘সিটি কর্পোরেশন থেকে মশার ঔষুধ ছিটানো হয় না’ এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ার্ডবাসী আরও বলেন, আগে মাঝে মধ্যে ঔষুধ ছিটানো হতো। কিন্তু এখন একেবারে হয়না বললেই চলে। যারা মশার ঔষুধ ছিটায়, তারা ময়লা, আবর্জনার স্থান, ড্রেন, যেখানে মশা বংশবৃদ্ধি করে সেখানে না ছিটিয়ে শুধুমাত্র সড়ক দিয়ে একবার হেঁটে মশার ঔষুধ ছিটিয়ে যায়। এতে কোন লাভ হয়না। মশাতো মরেই না শুধু শুধু সিটি কর্পোরেশনের পয়সা খরচ হয়।
এদিকে ১৪নং ওয়ার্ড ঘুরে আরও বেশ কিছু সমস্যার কথা জানাগেছে, তার মধ্যে মাদক-ছিনতাই অন্যতম। এছাড়াও সামান্য বৃষ্টিতে এলাকায় জলাবদ্ধতা ও জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে এলাকাটিতে।
এসব বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন ওয়ার্ডবাসী। তারা বলেছেন, ওয়ার্ডটিতে আগের চাইতে মাদক-ছিনতাইয়ের ঘটনা কিছুটা কমলেও থেমে নেই এসব অপকর্ম। এখনও উকিলপাড়া রেললাইন ও বোয়ালিয়া খালসহ বেশ কিছু এলাকায় মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসকল এলাকার অলি-গলিতে ওঁত পেতে থাকে বেশ কিছু ছিনতাইকারি চক্র। তারা সুযোগ পেলেই অস্ত্র ঠেকিয়ে নিরিহ মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে তাদের কষ্টার্জিত টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালোংকারসহ আরও অনেক কিছু। যেন কিছুতেই দমিয়ে রাখা যাচ্ছেনা ওই সকল ছিনতাইকারিদের। তাদের এসব অপকর্ম বন্ধে স্থানীয় কাউন্সিলরও ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন ওয়ার্ডবাসী। এলাকাবাসীর আরও দাবি ১৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলার ও প্যানেল মেয়র মনিরুজ্জামান মনির আবার কাউন্সিলার হলে সকল সমস্যা থেকে তারা পরিত্রাণ পাবেন।

তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমি এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। শুধু বলতে চাই, আমি কাউন্সিলর থাকাকালিন সময়ে মেয়রের সহযোগীতায় যেসব উন্নয়ন করেছিলাম এবং যেসব উন্নয়ন কাজ চলমান ছিলো, পরবর্তী কাউন্সিলর এসে আমার সেই সব কাজগুলো শুধু সমাপ্ত করেছেন। এর বাইরে এ ওয়ার্ডে নতুন কোন উন্নয়ন কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে আমার চাইতেও এসব বিষয় নিয়ে ভালো বলতে পারবেন এলাকার জনগণ। কারন, তারা দেখেছেন এলাকার উন্নয়নে কোন কোন জনপ্রতিনিধি কি কি করেছেন।
এদিকে মশার সমস্যার কথা স্বীকার করে বর্তমান কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধান বলেন, মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘মশা নিধন কর্মসূচী’ গত দুই বছর ধরে চলছে। মাননীয় মেয়র ডা: সেলিনা হায়াৎ আইভী আমাদের ওয়ার্ডে ৫ জন মশককর্মী দিয়েছেন। যারা প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মশার ঔষুধ ছিটিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করে আমার ওয়ার্ডে মশা আগের থেকে এখন অনেক বেশি কমে গেছে।
মাদক ও ছিনতাইয়ের প্রসঙ্গে দুইবার নির্বাচিত এই কাউন্সিলর বলেন, বিভিন্ন এলাকার ছেলেদের নিয়ে আমাদের এলাকায় ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। এরাই মূলত ছিনতাই করে থাকে। আমি ইতিমধ্যে প্রশাসনকেও এ বিষয়টা জানাইছি। প্রশাসনসহ আমরা চেষ্টা করছি এ ছিনতাই বন্ধ করতে। আর এখানে মাদক সমস্যা আজকের থেকে নয়। আমার বয়স যখন ১৭ বছর ছিলো তখন একটা শ্রেণী মদ বিক্রি করতো, গাঁজার খুব প্রকোট ছিলো। আমি তখন থেকেই এসবের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি এবং এখনও এসব অপকর্ম বন্ধে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, অনেক ভদ্র ঘরের সন্তানেরা এই মাদকের সাথে জড়িত রয়েছে। তাই মাদক যারা বিক্রি করে, তাদের সাথে আপার শ্রেণীর ওই লোকদের একটা সম্পর্ক থাকে। আমি মনেকরি, শুধুমাত্র মাদক ব্যবসায়ীদেরই নয়, মাদকসেবীদেরও একটা তালিকা হওয়া উচিৎ। তাদের কারনেই সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই আমি মাদক নির্মূলে সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।
গত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বর্তমান এই কাউন্সিলর সফিউদ্দিনের অন্যতম প্রতিশ্রতি ছিলো বহুআলোচিত ঐতিহ্যবাহী জিউসপুকুরকে অবমুক্ত করে ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়া। গত বছর এ নিয়ে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ আন্দোলন করে। তাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষন করেছিলেন বর্তমান এই কাউন্সিলর। ‘১৪নং ওয়ার্ডবাসীকে দেয়া সেই প্রতিশ্রতি কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ২০১৬ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর পরই জিউস পুকুরের সবকটি ঘাটলা পরিস্কার করে দিয়েছিলাম। বর্তমানে এ ঘাটলাগুলো ময়লা আবর্জনা দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কি কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জানিনা। তবে এখানে কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের কেউ ময়লা ফেলে না। বর্তমানে ৬টি ঘাটলার মধ্যে দুইটি ঘাটলা সচল আছে। ওই দুটি ঘাটলাকেই এখন রক্ষনাবেক্ষন করছি। তবুও আমি বেশ কয়েকজন লোক পাঠিয়ে ছিলাম পুকুরটিকে পরিস্কার করার জন্য। কিন্তু সেখানে ময়লার লেয়ার এতবেশি যে, ভেকু ছাড়া সেই লেয়ার তোলা সম্ভব না। আর এ কাজটি করতে হলে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগীতা লাগবে। সিটি কর্পোরেশনের সহযোগীতা ছাড়া কোনভাবেই জিউসপুকুরকে পরিস্কার করা সম্ভব না।
এছাড়াও তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পর থেকে আমি এলাকায় বহুকাজ করেছি। রাস্তা ঘাট ও ড্রেনের উন্নয়ন কাজসহ অনেক কাজই করা হয়েছে। এখন শুধু একটি কমিউনিটি সেন্টারের খুব প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে। সেটা নিয়েও ইতিমধ্যে কথা বলেছি। পানির ট্যাংকি এলাকাতে এ কমিউনিটি সেন্টারটি হওয়ার কথা রয়েছে। আমি পুনরায় নির্বাচিত হলে এই কাজটিই সবার আগে করার চেষ্টা করবো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort