শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

একনেক সভায় ৩৩৯৭ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ শহর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন

  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৪.০৪ এএম
  • ১৬৯ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দেশের তিনটি সিটি কর্পোরেশন ও একটি পৌরসভার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেখানকার প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে ৩ হাজার ৩৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণবভন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যোগদান করেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ব্রিফিংয়ে জানান, আজ একনেক সভায় ১২ হাজার ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ মোট ১২টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৭ হাজার ৯৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকা সরকার ব্যয় করবে। বাকী ৫৯৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে এবং বাকি ৩ হাজার ৪৩২ কোটি ৩১ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে।
ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে মেরিন অ্যাকুরিয়াম স্থাপন প্রক্রিয়া জোরদার করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. কাওসার আহমেদ জানান, প্রধানমন্ত্রী এর আগে কক্সবাজারে একটি মেরিন অ্যাকুরিয়াম স্থাপন প্রক্রিয়া শুরু করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কাওসার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে এর আলোকে ডিপিপি তৈরি করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ডিপিপিতে আরও কিছু সংশোধন করার পর, সেটি পরিকল্পনা কমিশনে জমা দেবে।
তিনি বলেন, অ্যাকুরিয়ামটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় হবে এবং এবং দেশের মানুষ এর থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী পানিসম্পদ বিভাগকে নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণের মত প্রকল্প আরও দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) খুব বেশি উন্নয়ন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়ে একটি চেম্বারের বাজেট সুপারিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে মান্নান বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকার দেশ চালাচ্ছে, তাই জনগণের প্রতি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।
তিনি বলেন, ট্র্যাক রেকর্ড, অভিজ্ঞতা, বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি এবং উন্নয়ন সহযোগিদের মনোভাব বুঝে সরকার তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এম এ মান্নান বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত ইতিবাচক এবং জোরালোভাবে উন্নয়নের সূচনা করতে চায়। আমরা বেসরকারি খাতকে তাদের কাজ করার পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করেছি এবং আমাদের মূল লক্ষ্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
তিনি জানান, ডিসিসিআই বাস্তব ভিত্তিক যেসব প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো আগামী বাজেটে বিবেচনা করা হবে।
শ্রীলঙ্কার সর্বশেষ আর্থিক সংকট সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার কোনো অপ্রয়োজনীয় কাজ করে না কিংবা কোন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে না। তবে কতিময় মহল শ্রীলঙ্কার বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের সাথে মেলানোর চেষ্টা করছে, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক বিবেচনায় মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোও ভিন্ন। তবে আমরা বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের মতামতগুলো ব্যাপারে গভীর দৃষ্টি রাখছি। আমি মনে করি শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির মত কোন আশঙ্কা করার যুক্তিসঙ্গত কারন নেই।’
এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. মামুন-আল-রশিদ জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে পরামর্শকদের উপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়ে আন্তরিক চেষ্টা চলছে।

তিনি অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রকল্পের হার নির্ধারণের বিষয়টি অর্থ বিভাগ দেখছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমন্বিত হারে কর্মসূচি চালু হয়নি, বরং পৃথক হারের কর্মসূচি চালু রয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো-স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ৩৩৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ আরবান ডেভেলপমেন্ট এন্ড সিটি গভারন্যান্স (ইউডিসিজি) প্রকল্প, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিল্পকলা একাডেমি ও আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিঠামইন, কিশোরগঞ্জ। প্রকল্প ব্যয় হবে ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ৪৪৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (২য় পর্যায়) প্রকল্প।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোটমনি নিবাস হোস্টেল নির্মাণ বা পুননির্মাণ প্রকল্পে (১ম সংশোধনী) ব্যয় হবে ৩৮৫ কোটি ২১ লাখ। ব্যয় বেড়েছে ৮৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ইরিগেশন ম্যানেজম্যান্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫৬২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০৯৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে তজুমদ্দিন ও লালমোহন উপজেলায় উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন, নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (১ম পর্যায়)। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সেচ ও নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে ২০৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কিশোরগঞ্জ জেলার ১০টি উপজেলায় নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজ, ওয়েভ প্রটেকশন এবং খাল পুনঃখনন প্রকল্পে ব্যয় হবে ৬৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের ঝিনাইদহ জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫০০ কোটি টাকা। বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৪০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ বিভাগের নতুন প্রকল্প ঢাকাস্থ ডেসকো এলাকায় বৈদ্যুতিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২২৭২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ৯০৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort