রংপুরে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। চলতি মৌসুমে এই তিন নদী থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ টন ইলিশ পাওয়া গেছে। দুই বছর আগেও এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৭০ থেকে ৮০ টন।
মৎস্য অধিদপ্তরের সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে চিত্র পাল্টে গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
মৎস্যজীবীদের দাবি, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্য নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে পারলে রংপুর অঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে আরও বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইলিশ বলতে একটা সময় মনে করা হতো এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মাছ। কিন্তু এখন রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ধরা পড়ছে ইলিশ। উত্তরের নদীগুলোতে ইলিশ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে মৎস বিভাগ। আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারা দেশের মতো ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে এই অঞ্চলেও। এ সময় জেলেদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার পাশাপাশি নগদ টাকাও দেওয়া হবে।
নিষিদ্ধ সময়ে এই অঞ্চলে ইলিশ ধরা বন্ধ করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অবসরপ্রাপ্ত মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা জুবায়ের আলী বলেন, ইলিশ মূলত সাগরের মাছ। যে সব নদীর সঙ্গে সাগরের যোগ আছে, সেই সব নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, রংপুর অঞ্চলে বর্ষাকালে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র খরস্রোতা হয়ে থাকে, তাই ওই সময় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রে ইলিশ পাওয়া যায়। সাগর থেকে ইলিশ আসে ডিম পাড়তে। এই অঞ্চলে ইলিশের আগমন ঘটাতে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং স্থানীয় জনগণ ও জেলেদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
রংপুর মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এক বছরে প্রায় সাড়ে ৩০০ টন ইলিশ ধরা পড়েছে এই অঞ্চলে। সরকারের ইলিশ নিধন বন্ধ কার্যক্রমের আওতায় এই অঞ্চলের জেলেদেরও প্রণোদনা দেওয়া হয়। যার ফলে দিন দিন এই অঞ্চলেও বাড়ছে ইলিশ।