শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন

আড়াইহাজারে গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে দুই নারীর মৃত্যু, আশংকাজনক আরও ২

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৩.৫৫ এএম
  • ৮৩ বার পড়া হয়েছে

আড়াইহাজারে বহুতল ভবনে অবৈধ গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে কানিজ খাদিজা নিপা (৩৯) ও চায়না আক্তার (৪০) নামে দুই নারী রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে শনিবার সকাল ৭টার দিকে ও দুপর ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আগুনে দগ্ধ অন্যরা হলেন, নিহত নিপার মা হাসিনা মমতাজ (৫৫), সোহান তালুকদার (৪৫) ও নাজমুল । এদের মধ্যে শরীরের ৫৫ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে হাসিনা মমতাজ (৫৫) ও ১০০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে সোহান তালুকদার (৪৫) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন। তাঁদের দুজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। নিহত চায়না ও নিপার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

শনিবার বিকেলে বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এরআগে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে আড়াইহাজার পৌরসভাস্থ লাসাদী গোয়ালপাড়া এলাকায় একটি বহুতল ভবনের চার তলায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ভবনের মালিকের নাম ছানাউল্লাহ।

নিহত নিপার বোন ইভা ইসলাম জানান, তাঁদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের গোপালদি এলাকায়। তাঁর বাবার নাম মো. কেসোয়ার মোল্লা। আড়াইহাজারের ওই বাসায় সাবলেট থাকতেন নিপা তিনি ফকির ফ্যাশনে সুইং পদে কর্মরত ছিলেন । তাঁর মা হাসিনা মমতাজ গতকাল সন্ধ্যায় নিপার বাসায় বেড়াতে আসেন।

দগ্ধ সোহানের ভাগনে ফাহিম মোল্লা বলেন, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার বাজারের পাশে একটি বাড়ির চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকেন সোহান ও তাঁর স্ত্রী চায়না। রাতে তিনি খবর পান, ওই বাসায় বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে। তিনি তখন সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল নিয়ে যান। আজ সকালে তাঁদের শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসেন।

ফাহিম আরও জানান, সোহান স্থানীয় ফকির গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তাঁর স্ত্রী চায়না গৃহিণী। রাতে আগুনে তাঁরা দগ্ধ হন। তবে কী থেকে এই বিস্ফোরণ হয়েছে, তা জানাতে পারেননি।

আহত নাজমুলের স্ত্রী রেশমি আক্তার বলেন, রহমানের কক্ষে থাকা বিদ্যুতের সুইজ থেকে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। কারণ তার কক্ষটি বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার কক্ষ থেকে বিস্ফোরণের সূত্রপাত।

শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, শতশত উৎসুক নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন। ভবনের চারতলার তিনটি কক্ষের আসবাবপত্র সব তছনছ হয়ে পড়ে রয়েছে। কক্ষগুলোর দরজা-জানালার গ্রিরিল ও কাঁঠের টুকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। জানালার কাঁচের টুকরা ভবন থেকে অনেক দূরে ছিঁটকে পড়েছে।

তবে কক্ষগুলোতে থাকা তিনটি সিলিন্ডার অক্ষত রয়েছে। ভবনের অন্যান্য কক্ষের ভাড়াটিয়ারা জানান, শুক্রবার দিনভরই তিতাস গ্যাসের চাপ বেশী ছিল। আবদ্ধ কক্ষে গ্যাস জমে বিস্ফোরণের এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

প্রতিবেশী বাড়ির মালিক দিলরুবা বেগম বলেন, গভীর রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে আমার বাড়ির টিনের চালের মধ্যে ভবনের জানার গ্রিরিলসহ বিভিন্ন অংশ ছিঁটকে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, এসময় বসত ঘরটি কেপে উঠে। আমি প্রথমে ভাবছিলাম কেউ আমার ঘরে বোম্ব মেরেছে। এমন শব্দ হয়েছে গেছে আমরা ঘরের সবাই ভেবে ছিলাম কেউ বোম্ব বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের আড়াইহাজার ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার শাহ্জাহান হোসেন বলেন, ফ্ল্যাটের ভেতর তিনটি কক্ষ, মাঝখানে রান্নাঘর। ঘরে তিতাসের গ্যাসের লাইন ও গ্যাস সিলিন্ডার দু’টোই ছিল।

তবে সিলিন্ডারটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে ঘরের ভেতর জমা গ্যাস থেকে এই বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করছি। তবে, নিশ্চিত করে তদন্তের পরই বলা যাবে বলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল হক তৈয়ব জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort