নিজস্ব প্রতিনিধি- নারায়ণগঞ্জ কোভিট 19 স্বেচ্ছাসেবক টিম খোরশেদের অন্যতম সদস্য মানবিক যোদ্ধা মোঃ আনোয়ার হোসেন এক বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে জানান , গত ২৫ জুন-২৪, মঙ্গলবার আমাকে জড়িয়ে ” মাসদাইর পৌর কবরস্থান থেকে কংকালের হাড় বিক্রির অভিযোগ ” এ শিরনামে প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারে আসলে তাহা আমার দৃষ্টিতে পড়ে। আমি এই সংবাদ পড়ে হতভম্ব ও বিস্মিত হই। সেই সাথে মানসিক ভাবে আঘাত পাই । কেননা এই তথ্য প্রকাশের সাথে আমার বাস্তব কাজের কোন মিল খুজে না পেয়ে। আমার ধারনা আমার মানবিক কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে কতিপয় কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাকে জড়িয়ে আমার সুনামকে নষ্ট করতে ও ঐতিহ্য বাহী মাসদাইর পৌর পবিত্র কবরস্থানের সুনামকে কুলশিত করতে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তাদের সাজানো নাটকের ভিডিও ফুজেট ধারণ করে তা প্রেরণ করেন।ভিডিও ফুটেজে যারা বক্তব্য দিয়েছে তাদেরকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনিনা বা তাদের নিকট আমার কোন টাকা পয়সার লেনদেন হয়নি।এ ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, মনগড়া ও বিভ্রান্তিমূলক। যারা নাটক সাজিয়ে এ চিত্র ধারন করে গণমাধ্যমকে তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ সংবাদ প্রকাশ করেছেন তাদেরকে ধিক্কার জানাই। সেই সাথে আমি প্রকাশিত সংবাদের তীব্র বিরোধিতা, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।
আমি সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমি আইন, সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল । আমার কাছে মানুষের জাত,ধর্ম শ্রেণী,বর্ণের ভেদাভেদ নেই। আমি মনে করি আমরা সবাই এক জাতি আর তা হলো মানব জাতি। এ চিন্তা নিয়ে আমি মহান আল্লাহকে স্মরণ করি ও ভয় পেয়ে তার সন্তুষ্টি পাবার আশায় মানুষের জন্য কল্যাণমূলক কাজ করে থাকি । এটা কোন লোক দেখানো নয়। আমি মনে প্রাণে মানুষের সেবক হতে চাই এবং তাহার চেষ্টা করে চলছি। মানুষকে ঠকিয়ে বা প্রতারণা করে টাকা উপার্জন করা এ ধরনের ঘৃন কোন মন মানসিকতা আমার চিন্তা চেতনা বা চরিত্রে নাই। বিগত কোবিট ১৯ এর সময় করোনা যোদ্ধা খোরশেদ ভাই এর টিম সদস্য হয়ে মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে জীবনের মায়া ত্যাগ করে পরিবার পরিজনের কথা চিন্তা না করে নারায়ণগঞ্জ শহরে করোনায় আক্রান্ত রোগি ও মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে যে কাজ করেছি তাহা শহরবাসী অনেকের জানা। এ পর্যন্ত অনেক মুমূর্ষু রোগিদের জন্য বিনামূল্যে শরীর থেকে রক্ত দিয়েছি। আমার মনের গভীরে যে মানব প্রেমের জন্ম হয়েছে তা চাইলেও কখনো এ সেবা মূলক কাজ হতে বের হয়ে আসতে পারবো না। তাই করোনা মরনব্যধী চলেগেলেও নিজ দ্বায়িত্ববোধ থেকে সেবা করার মনমানসিকতা নিয়ে মানব কল্যণে সবসময় কাজ করে যাচ্ছি ।আমি গত দুবছর যাবৎ মাসদাইর পৌর কবরস্থানে মৃত্যু ব্যক্তিদের দাফনের জন্য কবর খননের কাজ শুরু করি। এবং খননের কাজের বিনিময়ে যে অর্থ উপার্জন করি তা দিয়েই পরিবারের মুখে দুমুঠো আহারের ব্যবস্হা করে থাকি। আমি কবর খনন করা এছাড়াও বিছানায় পড়ে থাকা মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্য ,বা, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা অসহায় মানুষেদের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সেবা দিয়েথাকি।এ সেবার বিনিময়ে কার ও কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নিয়েছি বলে আমার মনে পড়ে না । কাহারো পরিবারে রুগির সেবা করার লোক না থাকলে আমি তার সেবক হিসেবে কাজ করি। এ ছাড়া অবসর সময়ে কবরস্থানকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে কাজ করি। কিছুদিন আগে আমি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন হতে কবরস্থানে মৃতদের দাফনের জন্য ব্যবহত বাঁশ, চট,মাটি,বালি বিক্রি ও সরবরাহের জন্য এবং এই কাজ পরিচালনা করতে মসজিদের পিছনে নির্ধারিত স্হানে একটি ঘর নির্মাণের অনুমোদন পাই।
এই কবরস্থান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন
রেজিষ্টার ও মসজিদ মোয়াজ্জেম এবং কবরস্থানের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হুজুর হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়া মোমেন,
সুপার ভাইজার সাদেক হোসেন স্বাধীন এবং সিকিউরিটি ও পরিচ্ছন্ন কর্মী মোঃ শামছুল হক। তাহারা সার্বক্ষণিক এখানেই থাকেন। উনারা আমার সম্পর্কে জানেন আমি কেমন মানুষ। যদি আমার কোন অসৎ উদ্দেশ্য থাকতো বা কোন বেআইনি কাজ করতাম তাহলে আমার পক্ষে তো এখানে থাকা সম্ভব ছিলো না।
আমার ধারনা আমি এখানে থাকাতে, যাদের স্বার্থে বেঘাত ঘটছে বা আমার মানবিক কাজে ঈর্ষান্বিত হচ্ছে তাঁরা আমাকে সমাজের চোখে অপরাধী সাজাতে নানা ধরনের কৌশলে ষড়যন্ত্রের জাল ফেলে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আমাকে হেয় করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে।
আপনারা সবাই হয়তো জানেন এ কবরস্থানের পাশে হিন্দু ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায় ধর্মাবলম্বীদের জন্য পৃথকভাবে সমাধিস্হল রয়েছে। অনেক সময় এসব স্হানে কিছু পাগল শ্রেণীর লোক,ঝাড় ফুর কবিরাজ ও মাকদ ও ছিনতাইকারী এসে অহেতুক ঘুড়াগুড়ি করে এবং তাদের আশ্রয় স্হল হিসেবে ব্যবহার করতে চায় । আমার চোখে এ ধরনের সন্দেহজনক ব্যক্তি নজড়ে আসলে আমি তাদের বাহিরে বের করে দেই। হয়তো তারাও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে বলে আমার ধারনা।
সর্বশেষ আমি বিনয়ের সুরে গণমাধ্যমের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের মাননীয় সাংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র, মহোদয় ,স্হানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ সচেতন মহলের নিকট অনুরোধের দাবি রেখে বলতে চাই, যারা এই ভিডিও চিত্র ধারন করে অপপ্রচার করছে তাদের চিহ্নিত করে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার। তাহলে প্রকৃত সত্য বের হবে আসবে। এতে যদি আমি কোন অন্যায় বা অপরাধমূলক কাজ করে থাকি আপনারা আমাকে যে শাস্তি দিবেন আমি মাথা পেতে নিবো। নয়তো আমাকে জড়িয়ে কবরস্হানকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদের শাস্তির দাবী জানাই।
মোঃ আনোয়ার হোসেনের এ বার্তা পেয়ে গণমাধ্যম কর্মী সরেজমিনে গিয়ে পৌর কবরস্থানের রেজিষ্টার ও মসজিদ মোয়াজ্জেম ও কবরস্থানের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হুজুর হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়া মোমেন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ কবরস্থানে মৃতদের দাফনের জন্য যে কবর খনন করা হয় সেখান থেকে যদি কোন মৃতের হাড় উঠে আসে তাহা আমারা আবার মৃতের দাফনের সাথে সেই হাড়গুলো কবরের মাটির নীচে ফেলে ঢেকে দেই। আর সার্বক্ষণিক ভাবে আমরা কয়েকজন এই কবরস্থানের দেখা শোনার কাজে নিয়োজিত রয়েছি। আমাদের জানা মতে এখানে হাড় বিক্রির বিষয় এখনো শুনিনি বা নজড়েও পড়েনি। আর এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের সিটি কর্পোরেশন থেকে জাকির স্যার এসেছিলেন। জাকির স্যার এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন।
আর আনোয়ার হোসেন এর বিষয়ে বলতে গেলে বলবো তিনি একজন মানবিক ও ভালো মনের মানুষ। সে এ কবরস্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে, অনেক কাজে সহায়তা করে যাচ্ছে দুই বছর যাবত। তার ভিতরে খারাপ কিছু কখনো দেখিনি। বিষয়টি অহেতুক ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে ।
কবর জিয়ারত করতে আসা বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে কথা হলে তাদের মন্তব্য আমরা অনেকে হয়তো তার নাম জানি না তবে এখানে এলে দেখতে পাই কখনো কবর খনন করতে, কখনো কবরের উপর গাছের পাতা ও লতাপাতা পরিস্কার করতে। সে অথাৎ আনোয়ার ভাই একজন ভালো ও মানবিক লোক। তার দ্বারা এই ধরনের কোন অপরাধ হতে পারে বলে আমাদের বিশ্বাস হয়না। ইসদাইর নিবাসী লিটন নামের একজন বলে আমি আনোয়ার ভাইকে নিয়ে মিথ্যা নিউজটি পেপারে দেখেছি । এ ধরনের কাজ করা তার দ্বারা কখনো সম্ভব না। আমি মাঝে মধ্যেই কবরস্থানে জিয়ারত করতে আসি। এর মধ্যে ৬-৭ মাস আগে আমার মাকে দাফন করেছি এখন আমি প্রতিদিন দুই একবার মায়ের কবরে দোয়া করতে আসি। আনোয়ার ভাই খুবই দায়িত্বশীল ও ভালো মনের মানুষ। আগে কবরস্থানে আগাছার জন্য কবর জিয়ারত করা যেত না। আনোয়ার ভাই আসার পর থেকে কবর স্থান অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়েছে ।পেপার পড়ে জানতে পারলাম আনোয়ার ভাই বেতনভুক্ত কর্মচারী না ,কিন্তু আমার মনে হয় এখানে যারা সিটি কর্পোরেশনের বেতন পায় তারাও এতটা দায়িত্ব নিয়া কাজ করে না ,যা আনোয়ার ভাই করে । তাই আমি মাননীয় মেয়র মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করছি আনোয়ার ভাইয়ের মত দায়িত্বশীল মানুষ এখানে প্রয়োজন।তাকে অফিসিয়ালি সুযোগ দিলে ,এ কবরস্থান আরও সুন্দর ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে ।আশপাশের দোকানদার ও গেটে বসা ফকির মিসকিনরাও আনোয়ার ভাইয়ের ব্যবহারে খুব খুশি। আনোয়ার কবরের হার বিক্রি করতে পারে এটা কোনভাবেই মানতে পারছিনা।
পাশেই হিন্দু সম্প্রদায় শ্মশানের সেক্রেটারি সুজন সাহাকে ফোন করলে আনোয়ারের সম্পর্কে বলেন, আনোয়ার শ্মশানের বিভিন্ন কাজে আমাদের সহযোগিতা করে থাকে। সে অনেক দায়িত্বশীল। আমরাই শ্মশানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ভালো মন্দ দেখার জন্য অনেক সময় বলে থাকি।যারা এখানে দায়িত্বে আছে আনোয়ার বিনা বেতনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তাদের চেয়ে বেশি খেয়াল রাখে শ্মশান ও কবরস্থানের প্রতি । আনোয়ার মিথ্যা ঘৃণিত ষড়যন্ত্রে শিকার। আমি এই ঘৃণিত ষড়যন্ত্রের তীব্র প্রতিবাদ জানাই । এবং পাশাপাশি মেয়র মহোদয় কে অনুরোধ করবো আনোয়ারকে কবরস্থান ও শ্মশান মিলিয়ে অফিসিয়ালি ভাবে কিছু করার জন্য। শ্মশানের পুরোহিত শান্তিবাবু চিকিৎসার জন্য ভারতে আছে তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি যানান, আনোয়ার ভাই শ্মশানের,অনেক কাজে আমাকে সহযোগিতা করে। হয়তো তাঁর এই ভালো কাজের জন্য অনেকের স্বার্থে আঘাত লাগে পারে। সে জন্য তারাই আনোয়ারের ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে,ও মিথ্যা,বানোয়াট, অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে আমি মনে করি। তাই আমি এই ঘৃণিত ,অপপ্রচার, ও চক্রান্তকারীদের ধিক্কার জানাই।সেই সাথে আনোয়ার ভাইয়ের জন্য দীর্ঘায়ু কামনা করি।
এছাড়াও স্হানীয় এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জোড়ালো দাবি জানান, যাহারা এই অপপ্রচারের কাজে লিপ্ত রয়েছে তাদেরকে যেনো খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। নয়তো তা না হলে ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও নতুন কৌশল অবলম্বন করে ঐতিহ্যবাহী সুনামধন্য পৌর কবরস্থানের অপপ্রচারের চেষ্টা করবে।তাই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বিষয়টি গভীর ভাবে নিয়ে কঠোর হস্তে দমন করবেন বলে জোড়ালো দাবি জানাই।