নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, আমাকে বিএনপি যে অভিযোগে বহিষ্কার করেছে তা সঠিক নয়। আমি দলীয় কোন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। মহাসচিব মিডিয়াতে বলেছে যে দল স্থানীয় নির্বাচন করবে না তবে যারা স্থানীয় নির্বাচন স্বতন্ত্রভাবে করে সেটা করতে পারবে।
নেতাকর্মী ও জনগণের চাহিদায় আমাকে নির্বাচন করতে হয়েছে। দল থেকে কেউ আমাকে নিষেধ করেনি। একজন টেলিফোনও করেনি যে তুমি নির্বাচন করো না।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শহরের মাসদাইরে মজলুম মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে দোয়ার পূর্বে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০১১ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। আমাকে পাঁচ ঘন্টা আগে বসে যেতে বলেছিল। আমি বসে গেছি। আমাকে যদি দল নির্দেশ দিত আমি নির্বাচন করতাম না। আমি তখন বলতে পারতাম নারায়ণগঞ্জবাসীকে যে দলের নির্দেশে আমি নির্বাচন করতে পারবো না।
আমাকে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য কাজ করতে হবে। আমি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম। সিটি করপোরেশন হকার উচ্ছেদ করতে যায় পারে না লাভ হয় পুলিশের। তারা বস্তি উচ্ছেদ করল।
চুনকা সাহেব তো বস্তি উচ্ছেদ করেনি। শহরকে সুন্দর করার নামে তারা বস্তি উচ্ছেদ করল। আইন হল উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন। সেটা তো সরকার করেনি।
আমি একসময় বিএনপির সাথে ছিলাম। বিএনপি আমাকে বিআরটিসির মত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দিয়েছে তাই আমি বিএনপির জন্য শুভকামনা করি। বিএনপি নেতাকর্মীদের জন্য আমার দোয়া বিএনপি সুখে থাক ভাল থাক।
এ দল করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছে তাদের সুস্থতা কামনা করি এবং যারা নিহত তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। আমি দলে বহিস্কৃত থাকার পরেও নেতাকর্মীদের পাশে আছি ভবিষ্যতেও থাকবো।
দেশের রাজনীতিতে ক্রুশিয়াল টাইম চলছে। এসময়ে কৌশল, আলোচনা, সুবিধা-অসুবিধা সবকিছুর ওপর নির্ভর করেই ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে। সময়ই বলে দেবে ভবিষ্যত কী।
জোটবদ্ধ নির্বাচনের কালচার পৃথিবীর সব জায়গায় আছে। সেপ্টেম্বর অক্টোবরে দেশের রাজনীতির অনেক পরিবর্তন হবে বলে আমার মনে হচ্ছে। এ পরিবর্তনে কে কী অবস্থায় থাকবে তা সময়ের ওপর নির্ভর করবে।
আমি মনে করি দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হওয়া দরকার। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে যা হয়েছে সেটাকে নির্বাচন বলা যায় না। এ পদ্ধতিতে আমলা পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহিঃবিশ্বে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে কিছু কাজ হয়েছে তা ঠিক কিন্তু ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মানি লন্ডারিং এ সরকারের আমলে হয়েছে। আমাদের দেশের যে নমিনেশন প্রক্রিয়া এটা একটি অসুস্থ প্রতিযোগীতা। এখানে অনেক ভাল ত্যাগী নেতাকর্মীরা বাদ পড়ে যায়।
মনোনয়ন বানিজ্য কমিটি বানিজ্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর ফলে দলে ত্যাগী নেতাকর্মীরা বাদ পড়ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল কারণ ছিল সম্পদের সুষম বন্টন। আজও দেশের সকল সম্পদ পাঁচ শতাংশ লোকের হাতে বন্দি। এর ফলে নির্বাচনেও টাকার প্রভাব থাকে৷ এই টাকার প্রভাব বন্ধ না হলে পরিক্ষিত রাজনৈতিক কর্মীদের নির্বাচিত হওয়া সম্ভব না। এখানে ভোটার বা জনগণেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে।
এসময় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।