বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
মধ্যবিত্তের সঙ্গে টিসিবির লাইনে মেসের শিক্ষার্থীরাও ককটেল বিস্ফোরণের মামলা: মির্জা ফখরুল, আব্বাসসহ ৬৫ জনের অব্যাহতি খাগড়াছড়িতে মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে বাস ভাড়া বাড়লো ৫ টাকা রেজা, গালিব ও কামাল মোল্লাকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার কবরস্হানের নামে জমি দখল – কবর প্রতি চাঁদা ১৫০০! জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার স্থায়ী পরিষদের মতবিনিময় সভায় গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন এম এইচ তালুকদার বন্দরে ধামগড় ইউনিয়নে দূরভিত্তরা কৃষক এর পেপে ও আমড়া বাগান কেটে ফেলেছে রূপগঞ্জে পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন নারায়ণগঞ্জ ডিসি সিদ্ধিরগঞ্জে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ৫ আসামি গ্রেপ্তার; রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

আজিমপুরে গুলিতে নিহত: শরীয়তপুরে তছনছ দুলালের সুখের সংসার

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪, ৪.৫৮ এএম
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

অভাবের সংসার কাটিয়ে সবেমাত্র সুখের মুখ দেখেছিলেন ব্যাংক কর্মচারী দুলাল মাহমুদ। ঘর করার জন্য গ্রামে কিনেছিলেন এক টুকরো জমিও। বাবা-মা, স্ত্রী আর দুই সন্তানকে নিয়ে পেতেছিলেন সুখের সংসার। তবে সেসব আজ শুধুই স্মৃতি। বুলেটের আঘাত কেড়ে নিয়েছে গোটা পরিবারের হাসি। এখন শুধু পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ছেলে আর বাড়ি ফিরবে না, ডাকবে না মা বলে। এই কথা মনে করতেই ডুকরে কেঁদে উঠছেন মা জলেখা বিবি।

বিচার চান ছেলে হত্যার। জানা যায়, দুলাল মাহমুদের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার চরখাগুটিয়া চৌকিদার কান্দি এলাকায়। সিদ্দিক খালাসি ও জলেখা বিবির সাত সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ছোটবেলা থেকেই দারুণ অর্থকষ্টে দিন কেটেছে তাদের। একদিকে বাবা কুষ্ঠরোগী, অন্যদিকে গরিব হওয়ায় ছোটবেলা থেকে কাজ শুরু করেন দুলাল। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কখনো চালিয়েছেন ভ্যান, আবার কখনো কৃষি শ্রমিকের কাজ করেছেন।

২০০১ সালে পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন দুলাল মাহমুদ। পরে ভাতের অভাবে গ্রাম ছেড়ে পাড়ি জমান মুন্সীগঞ্জ জেলায়। সেখানে একটি বাড়িতে লজিং থেকে শেষ করেন উচ্চ মাধ্যমিক। এরপর ঢাকায় শুরু করেন চাকরির সন্ধান। ১৪ বছর আগে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকে চাকরি হয় তার। সুদিন ফিরে আসে। আট বছর আগে বিয়ে করেন। বর্তমানে তার সংসারে সাত বছরের আদিয়াত ও সাড়ে তিন বছরের আরিশা নামের দুই সন্তান রয়েছে।

দুলালের ছোট ভাই জসিম খালাসী প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, ১৮ জুলাই বিকাল থেকেই ঢাকার আজিমপুর এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। এদিন অফিস শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন দুলাল মাহমুদ। বাসার সামনে গলির মাথায় আসতেই হঠাৎ একঝাঁক রাবার বুলেট এসে বিদ্ধ করে তার হাত আর পেটে। মুহূর্তেই সব শেষ। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দুলাল। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। এর পরের দিন তার মৃত্যু হয়। পরে গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফন করা হয়।

দুলাল মাহমুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কেনা জমির পাশে তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। মা জলেখা বিবি তসবি জপে ছেলের জন্য দোয়া করছেন। ছেলের শোকে পাথর হয়ে বসে আছেন বাবা সিদ্দিক খালাসি।

জলেখা বিবি বলেন, ‘ছোটবেলা থিকা পোলারে দুইডা টাকা দিতে পারি নাই। নিজে বদলা (কৃষিশ্রম) দিয়া, মানুষের দোকানে কাম কইরা পড়ালেহা করছে। এহন সে চাকরি পাইছে। কিন্তু আমার নির্দোষ পোলাডারে মাইরা ফেলল। আমার বুক খালি কইরা, আমার নাতি-নাতকুর দুইডারে এতিম বানাইয়া দিল। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

দুলালের ছোট ভাই জসিম খালাসি বলেন, ‘তিনিই আমাগো দেইখা রাখতেন। আজ তিনি আর নাই। আমাদের একটাই দাবি, ভাইয়ের পরিবারটির পাশে যেন সরকার দাঁড়ায়।’

পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা ওকে (দুলাল) কখনো দেখিনি রাজনীতি করতে বা কারও সঙ্গে উচ্চবাচ্য করতে। আমরা চাই সরকার পরিবারটির পাশে দাঁড়াক।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort