নিজের স্বার্থ উদ্ধারে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আরেক নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে ওয়াশিংটনের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, অবাধ্য প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে শায়েস্তা করতে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে হস্তক্ষেপের চেষ্টা চালাচ্ছে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদকে ডেকেছিলেন এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রদূতকে ইউক্রেনের ঘটনায় পাকিস্তানি নেতৃত্বের ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়ার নিন্দা জানান তিনি।
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, গত ২৩-২৪ ফেব্রুয়ারি ইমরান খানের মস্কো সফরের ঘোষণার পরপরই পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা সহযোগীরা অত্যন্ত চাপপ্রয়োগ করতে শুরু করে। এমনকি মস্কো সফর বাতিল করতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে আল্টিমেটামও দেয় তারা।
কিন্তু ইমরান খানের রাশিয়া সফরের সময় ঘনিয়ে আসায় ডোনাল্ড লু ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন এবং অবিলম্বে সফর স্থগিত করার দাবি জানান, যদিও ওয়াশিংটনের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চলতি বছরের ৭ মার্চ পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের সাথে আলাপকালে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা (ডোনাল্ড লু বলে ধারণা করা হয়) ইউক্রেনের চলমান ঘটনায় পাকিস্তানি নেতৃত্বের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের নিন্দা জানান। একই সঙ্গে তিনি ক্ষমতা থেকে ইমরান খানকে সরিয়ে দেওয়া হলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের অংশীদারিত্ব সম্ভব বলে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন।
জাখারোভা বলেন, পরবর্তী পরিস্থিতিতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যুক্তরাষ্ট্র অবাধ্য ইমরান খানকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দলের কিছু সহযোগী হঠাৎ দল ছেড়ে চলে গেলেন। তাৎক্ষণিকভাবে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব সংসদে তোলা হল।
বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নির্লজ্জ মার্কিন হস্তক্ষেপের আরেকটি প্রয়াস দেখা যাচ্ছে। উল্লিখিত ঘটনাপ্রবাহ স্পষ্টভাবে এর পক্ষে সাক্ষ্য দেয়।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, পাকিস্তানি ভোটাররা নির্বাচনের সময় তাদের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানবেন। যে নির্বাচন জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে হওয়া উচিত।