তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান শনিবার তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কার করার নির্দেশ দেন। যাঁরা কারাবন্দি নাগরিক সমাজের নেতার মুক্তির আবেদন করেছিলেন। ‘আমি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছি যে এই ১০ জন রাষ্ট্রদূতকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পারসোনা নন-গ্রাটা (কূটনীতিতে ব্যবহৃত একটি শব্দ, যা বহিষ্কারের আগে প্রথম পদক্ষেপকে নির্দেশ করে) হিসাবে ঘোষণা করার জন্য,’ বলেন তুর্কি রাষ্ট্রপতি।
তবে তিনি নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করেননি। ‘তাদের অবশ্যই তুরস্ককে জানতে এবং বুঝতে হবে’। তিনি রাষ্ট্রদূতদের সম্পর্কে বলেন, ‘তাদের অবশ্যই এখান থেকে চলে যেতে হবে যেদিন তারা আর তুরস্ককে চিনবে না।’
রাষ্ট্রদূতরা সোমবার একটি ‘অত্যন্ত অস্বাভাবিক যৌথ বিবৃতি’ জারি করে বলেন যে, প্যারিসীয় বংশোদ্ভূত মানবাধিকারকর্মী ওসমান কাভালার অব্যাহত আটক তুরস্কের ওপর ‘একটি ছায়া ফেলেছে’। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে এবং সুইডেন ‘(কাভালার ক্ষেত্রে) ন্যায়সঙ্গত ও দ্রুত সমাধানের’ আহ্বান জানিয়েছে।
কাভালা ২০১৭ সাল থেকে দোষী সাব্যস্ত না হয়ে কারাগারে আছেন। তিনি ২০১৩ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এবং ২০১৬ সালে একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সাথে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। অভ্যুত্থানপ্রচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর তিনি এরদোয়ানমুক্ত তুরস্কের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
গত সপ্তাহে জেল থেকে এএফপির সঙ্গে কথা বলেন বাভালা। সেখানে তিনি বলেন, আমি এরদোয়ানের প্রায় দুই দশকের শাসনের বিরোধিতা করছি। এ জন্য নিজেকে একটি হাতিয়ারের মতো মনে হয়।
ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার পর্যবেক্ষক কাভালাকে বিচারাধীন অবস্থায় মুক্তি দেওয়ার জন্য ২০১৯ সালের ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের আদেশ মেনে চলার জন্য তুরস্ককে একটি চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। যদি তুরস্ক (৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে) তার পরবর্তী বৈঠকে তা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে স্ট্রাসবার্গ-ভিত্তিক কাউন্সিল আঙ্কারার বিরুদ্ধে প্রথম শাস্তিমূলক কার্যক্রম শুরু করতে ভোট দিতে পারে।