নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে মানবপাচারকারী তরিকুল ইসলাম ওরফে আল আমিন (৩০) কে গ্রপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল ইসলাম ওরফে আল আমিন সোনারগাঁও থানাধীন চর গোয়ালদী এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।
বুধবার (২৪ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি মো. রিজওয়ান সাঈদ জিকু। এরআগে মঙ্গলবার (২৩ মে) সোনারগাঁও থানাধীন চর গোয়ালদী এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আল-আমিনকে আটক করা হয়। আটক আল আমিন একই এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।
র্যাব জানায়, নিরীহ মানুষকে বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা আত্মসাৎ করা ও দেশের বাইরে বিক্রি করা তার পেশা। আসামি ও তার সহযোগীরা বিদেশে তথা মালয়েশিয়াতে চাকরির উদ্দেশে লোক পাঠাতে পারে এবং মোটা অংকের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে এরূপ প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলে মানুষকে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে প্রলুদ্ধ করে থাকে।
এভাবে ভুক্তভোগী নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে অগ্রিম মোটা অংকের টাকা নিয়ে আসামিরা আত্মগোপনে গিয়ে পলাতক থাকে। তারপর একের পর এক নিরীহ মানুষ আসামিদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে বিদেশ যাওয়ার লোভে জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হয়।
আটক ব্যক্তি বরিশালের গৌরনদী মডেল থানাধীন ধুড়িয়াইল গ্রামের খোরশেদ সরদারের ছেলে মো. নয়ন সরদারকে মালয়েশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কাপড়ের দোকানে নিয়মিত এসে তাকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে মোটা অংকের বেতনের চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে বলে প্রলুব্ধ করে।
পরবর্তীতে তাদের মধ্যে বিদেশে যাওয়ার খরচ বাবদ ৪ লাখ টাকার একটি চুক্তি পত্র সম্পাদিত হয়। চুক্তি পত্রের শর্ত অনুযায়ী বাদী মোট তিন ধাপে ৩ লাখ টাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যের অ্যাকাউন্টে পাঠায়।
পরবর্তীতে গত ২০২২ সালের ৮ অক্টোবর বাদীসহ ৫-৭ জনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর উদ্দেশে বিমান যোগে নেপালের কাঠমুন্ডুতে পাঠিয়ে দেয় এবং বাদীকে সেখানে জিম্মি করে আরও একলাখ টাকা দিলে তাকে মালয়েশিয়া পাঠাবে বলে কথা দেয়।
কিন্তু তাদের কথা অনুযায়ী একলাখ টাকা দেওয়ার পরও তাকে মালয়েশিয়া না পাঠিয়ে নেপালের কিছু দালালদের কাছে বিক্রি করে দেয়। প্রায় ২৫ দিন সেখানে মানবেতর জীবন কাটিয়ে নেপালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তায় দেশে ফিরে আসে।
পরবর্তীতে দেশে এসে আসামিদের বিরুদ্ধে বরিশাল জেলার গৌরনদী মডেল থানায় ২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা করে।
আটকের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বরিশাল জেলার গৌরনদী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।