বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু বলেছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাফিয়া আর দুর্বৃত্তরাই এখন দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। ইষ্ট ইন্ডিয়া কো¤পানীর মত বাংলাদেশকে এরা লুটের বাজারে পরিণত করেছে। করোনার অতিমারীতে শ্রমিক-কৃষকসহ যে উৎপাদক শ্রেণী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদনের চাকা সচল রেখেছেন তারা রাষ্ট্রের কোন সহযোগিতা পায়নি। দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ উর্ধ্বর্গতি আর জীবনযাত্রার লাগামহীন ব্যয়বৃদ্ধির কারণে গ্রাম-শহরের শ্রমিক-মেহনতিদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। বর্তমান বেতনে শ্রমিকদের ১৫ দিন চলাই কঠিন। কেবল গত দুই বছরেই চার কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্রসীমার নীচে নেমে এসেছে, উল্টোদিকে এই একই সময়ে ২০ হাজার নতুন কোটিপতির জন্ম হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে মহান মে দিবসের সমাবেশে আবু হাসান টিপু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন. স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও কার্যত: ট্রেড ইউনিয়নসহ শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার শ্রম আইন নেই। নানা রকম চাপ, হুমকি, চাকুরীচ্যুতি, দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে সরকার ও মালিকপক্ষ শ্রমিকদেরকে সংগঠিত হতে দেয় না। শ্রমিকদের বাঁচার ন্যায্য আন্দোলনকে তারা ষড়যন্ত্র হিসাবে আখ্যায়িত করে কথায় কথায় শ্রমিকদের চাকুরীচ্যুৎ করছে। শ্রমিকদের বিভক্ত রাখতে, শ্রমিক আন্দোলনকে দুর্বল রাখতে মালিক আর সরকারের মদদে অসংখ্য দালাল আর সুবিধাবাদী শ্রমিক সংগঠন আর কথিত শ্রমিক নেতাদের তারা জন্ম দিয়েছে। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরও শ্রমিকশ্রেণীসহ শ্রমজীবী মেহনতি পরিবারসমূহের উপযুক্ত চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান নিশ্চিত হয়নি; শ্রমিক পরিবারসমূহের জন্য দুর্ম‚ল্যের বাজারে রেশনের ব্যবস্থা নেই, নেই মহার্ঘ্য ভাতা, ঝুঁকি ভাতা। আসলে মালিকশ্রেণী ও সরকার তাদেরকে উৎপাদন যন্ত্রের বেশী কিছু মনে করে না।
বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে ১ মে রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্ত¡রে এ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্ত্যব্য রাখেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান সহিদুল আলম নাননু, শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিদা বেগম, বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব রোকসানা বেগম, আইয়ুব আলী, নাছির হোসেন, সুরুজ আলী মাতুব্বর, মোহাম্মদ আলী প্রমূখ।
সমাবেশ শেষে বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি সুবিশাল লাল পতাকার র্যালী নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে।