নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান বলেন, এখন সবাই আওয়ামী লীগ। এখন তো গাছের পাতায় পাতায় আওয়ামীলীগ। পরগাছারা যেভাবে ঝাকিয়ে বসছে তাতে আসল গাছ আর সামনে আসতে পারেনা। এখন সর্বস্তরে দেখি আমাদের উপদেশ দেয়, দিক নির্দেশনা দিতে চায়। সবাই বলে শুধু আপা আছে।
যেভাবে শুধু আপা আপা ঝপে এভাবে যদি আল্লাহকে ডাকতো তাহলে বোধহয় আল্লাহ বেহেশতের দরজা খুলে বলতো আয় বেশী দেরিছ করিস না। তাই সকলকে বলছি ষড়যন্ত্র আরো হবে।
সামনে হয়তো অনেক বড় পরীক্ষা আমাদের দিতে হবে। সামনে কঠিন সময় আসছে। তাই কিছু চেয়ার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য রাইখেন। কারণ রক্ত দিলে তারাই দিবে, অন্যকেউ দিবে না। আঘাত করলে প্রতিঘাত তারাই করবে, অন্য কেউ করবে না, এটাই সত্য। ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ৭৫ সালের পর যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নূর হোসেনদের মতো জীবন দিয়েছে, তাদের সম্মানটা দেওয়া হয়নি। তাদের অনুদান না দিলেও সম্মানটা দেওয়া হক। নামটা অন্তত প্রকাশ করা হউক, তা না হলে কোন একদিন নূর হোসেনদের নাম সন্ত্রাসের তালিকায় চলে আসবে।
রোববার (১৪ নভেম্বর) দুপুর বন্দরের নবীগঞ্জের সিএসডি ক্যাম্পাসে নারায়ণগঞ্জে আধুনিক ও বড় আকারের খাদ্যগুদাম নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর ও কাজের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এমপি। স্বাগত বক্তব্য দেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) শেখ মুজিবর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মাৎ নাজমানারা খানুম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
শামীম ওসমান বলেন, ১৯৮১ সালে যেদিন জাতির পিতার কন্যা ৩১ বছর বয়সে দেশে ফিরে এসেছিলেন এত মানুষ সেদিন কোথায় ছিল। নারায়ণগঞ্জের মাটিতে ৮১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত ৪৯ টা ছেলের লাশ মাটিতে দাফন করেছি। ৯৫ থেকে ৯৬ ১ বছরে ১২ জনকে জীবন দিতে হয়েছিল জাতির পিতার কন্যাকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য। স্লোগান দিয়েছিল শুধু একটা জয় বাংলা।
আমার ছোট ভাই মনির ২১ দিন আগে বিয়ে হয়েছিল তার বুকের মধ্যে গুলি করা হয়েছিল। পাপ্পুকে হত্যা করা হয়েছিল চাষাঢ়ার রাস্তার মোড়ে। সেদিন পুলিশ আমাদের উপর গুলি চালিয়েছিল। আমরা রাজপথে ছিলাম। আমরা কারো বিরুদ্ধে স্লোগান দেইনি।
সেই লাশ নিয়ে যাবার সময় লাশের উপর গুলি করা হয়েছিল। সেই লাশ নামিয়ে ৭৫টা ছিটা গুলি আমরা বের করেছিলাম। দাফন দিতে পারিনি কবরস্থানে। তখন লিংক রোড হয়নি, বর্তমান লিংক রোডের পাশে মসজিদের সামনের একটি জায়গায় লুকিয়ে দাফন দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন যখন চার দিকেই আওয়ামী লীগের কথা শুনি, তখন ৭৫ সালের কথা মনে হয়। তখনও মানুষ স্লোগান দিতেন, এক নেতার এক দেশ, বাংলাদেশ-বাংলাদেশ। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সেদিন বঙ্গবন্ধুকে মারে নাই, মেরেছে খন্দকার মোস্তাকরা।
এখনও মোস্তাকরা তৎপর, দলের ভিতরে ও বাহিরে ষড়যন্ত্র চলছে। সেই ষড়যন্ত্র নারায়ণগঞ্জে যেমন চলছে, সব জায়গায় একই ভাবে চলছে। নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন গেছে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল, লাশের রাজনীতির চেষ্টা হয়েছিল। প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব সকলের সহযোগিতায় দলীয় নেতাকর্মীদের ধৈর্য্যের কারণে ও চেষ্টায় তা রুখে দেয়া সম্ভব হয়েছে।