রুদ্রবার্তা২৪.নেট: বার্তা ২৪ ডটকম এর সম্পাদক ও আনন্দ টিভির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন এর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর ভাই আলী রেজা রিপনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের (আইসিটি অ্যাক্টে) দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় ২০ই নভেম্বর শনিবার দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় এই মানববন্ধন এর আয়োজন করেন স্থানীয় সাংবাদিকগণ।
জানা গেছে, একটি সংবাদ প্রকাশের জের ধরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ছোট ভাই আলী রেজা রিপন ২০১৭ সালের ১৫ এপ্রিল আইসিটি আইনে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় তিনটি মামলা করেন। তিনটি পৃথক মামলায় দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ডটকম এর সম্পাদক সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন, নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ হাসান কচি ও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদলকে বিবাদী করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সুশিক্ষিত তরুণ, সৎ সাহসী ও মেধাবী সাংবাদিক নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ডটকম এর সম্পাদক ও আনন্দ টিভির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন একজন উদিয়মান সাংবাদিক আমাদের তরুণ ও ছাত্র সমাজের গর্ব। আইসিটি এ্যাক্ট ৫৭ ধারায় মামলার কারণে তার জীবনকে আজ ধ্বংসের মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে তার বাবা গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে এছাড়া কিছু দিন আগে তার বাবা আইসিউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন কিন্তু এই মামলায় গ্রেফতারের কারণে তার পরিবার সহ আত্মীয়, বন্ধু, শুভাকাঙ্খী আমরা সকলেই খুবই চিন্তিত ও র্মমাহত।
আমরা জানতে পেরেছি যে সংবাদটি প্রকাশে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তা অনলাইন ইত্তেফাক ডটকম ডট বিডিতেও প্রকাশ করা হয়। যা পরে পরিবর্তন করে ফেলা হয়। এরপর তথ্য বিভ্রাটের কারণে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ডটকম এর থেকেও সে সংবাদটি একই দিনে প্রত্যাহার করা হয়। এবং সংবাদ প্রত্যাহার ও দু:খ প্রকাশ এই শিরোনামে নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ সংবাদ মাধ্যমটিতে প্রকাশও করা হয়। তারপরেও এ অযৌক্তিক মামলা কেন ? এই মামলাটির মাধ্যমে একজন ছাত্রের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঢেকে দেয়া হয়েছে। তাই আমারা সকলেই এই মামলাটিকে প্রত্যাহার করে নেয়ার জোড় দাবী জানাই। এছাড়াও আরও ৪ জন সাংবাদিককে মামলা দেয়া হয় যারা প্রত্যেকেই পেশাদার সাংবাদিক। এদেরকে এই মামলা দেয়ার মাধ্যমে জাতিকে কলংকিত করা হচ্ছে।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা সকলেই জানি সাংবাদিকরা হচ্ছে জাতির বিবেক। যারা বিভিন্ন সময়ই বিভিন্ন হামলা ও মামলার সম্মূখিন হলেও র্সবকালেই দেশ ও জাতির স্বার্থেই কাজ করে যাচ্ছে। তারা সকল বাধা বিপত্তিকে পেরিয়ে আমাদের মাঝে সংবাদ উপস্থাপন করছে। যা আমরা হয়ত কিছু টাকার বিনিময়ে একটি সংবাদ পত্র কিনে অথবা ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে সহজেই জানতে পারছি। যা ছাড়া কখনই হয়তো বিভিন্ন জেলা ও দেশ বিদেশের সকল সংবাদ একসাথে পাওয়া সম্ভবময় ছিলনা। আর বর্তমানে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলো থাকাতেই যেকোন সংবাদ জানার জন্য পরের দিনের অপেক্ষায় থাকতে হয়না। তাৎক্ষনিক যেকোন ঘটনা সারা বিশ্ব জানতে পারে।
কিন্তু আইসিটি এ্যাক্ট ৫৭ ধারায় যে মামলাটি সাংবাদিকদের করা হয়েছে এর দ্বারা এই আইনটিকে অপব্যবহার করে সাংবাদিকদের হয়রানী করা হচ্ছে। যা সচেতন মানুষ হিসেবে কখনই আমরা কামনা করিনা। তাই আমাদের সকলের অনুরোধ থাকবে মাননীয় মেয়র মহোদয় ও তার ভাইয়ের কাছে মামলাটি প্রত্যাহার করে সাংবাদিকদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে।
এদিকে, ২০ই নভেম্বর শনিবার সকালে সাংবাদিক লিংকনকে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হলে আদালত চত্বরে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত সকল সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। এর আগে ১৯ই নভেম্বর শুক্রবার মধ্যরাত ২টার দিকে শহরের কলেজ রোডের বাসা থেকে সাংবাদিক লিংকনকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সকালে পুলিশ সাংবাদিক লিংকনকে আদালতে নিয়ে আসে।