নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিউটি বেগম (৫০) নামে এক নারীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। এসময় বাড়িটিতে দেওয়া আগুনে পুড়ে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
হামলার জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে হারেজের ছেলে মো. জুয়েল ও তার লোকজনকে অভিযুক্ত করছেন বিউটির স্বজনরা।
গত সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের ভক্তবাড়ি এলাকায় হামলা-অগ্নিসংযোগে বিউটি দগ্ধ হন। পরে তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে নেওয়া হয়। রাত ১১টায় তিনি মারা যান।
বার্ন ইনিস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, বিউটির শরীরের ৭৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
ওই ঘটনায় বিউটি বেগমের মেয়ে শিমু আক্তারও দগ্ধ হয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। শিমু স্থানীয় এইচ আর মডেল স্কুলের শিক্ষক।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে হারেজের সঙ্গে একই এলাকার জমি ব্যবসায়ী জাহের আলীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এর জেরে সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে হাবিবুর রহমান ও তার ছেলে মো. মতিন মারধরের শিকার হন। ঝগড়ার সময় জাহের আলীর পক্ষ নেন বিউটি বেগমের ছেলে বেলায়েত হোসেন।
এর জেরে বিকেলে হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. জুয়েল দেশীয় অস্ত্রসহ কয়েকজন লোক নিয়ে বিউটি বেগমের বাড়িতে হামলা চালান। এক পর্যায়ে তারা ওই নারীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে তার ঘরের দরজায় আগুন দেন। আগুন ঘরের পাশে থাকা রান্না ঘরে ছড়িয়ে পড়লে বিউটি বেগম দগ্ধ হন৷ তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে মেয়ে শিমু আক্তারের হাত ঝলসে যায়। পরে আশপাশের লোকজন এসে বিউটি বেগম ও শিমু আক্তারকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বিউটি আক্তারকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যুর হয়।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) আবির হোসেন জানান, বাড়িঘরে হামলা ও আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে অভিযুক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি৷ এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান ওরফে হারেজ ও তার ছেলে ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷