ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ন-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের তিন কর্মকর্তা কর্মচারী ।
তারা হলেন- রিসোর্টের রিসিপশন কর্মকর্তা নাজমুল হাসান অনি, সুপার ভাইজার আবদুল আজিজ পলাশ ও আনসার সদস্য রতন বড়াল।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এর আদালতে তাদের এই স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এর আগে সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। দুপুর সাড়ে বারোটার সময় তাকে আদালতে হাজির করা হলে দুইটা পর্যন্ত চলে স্বাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম। পরে মামুনুলকে কাসিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিবুদ্দিন আহমেদ জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই ধর্ষণ মামলায় ৪৩ জন স্বাক্ষী রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়্যাল রিসোর্টের সুপারভাইজার আব্দুল আজিজ পলাশ, পাবলিক রিলেশন অফিসার নাজমুল হাসান অনি ও আনসার সদস্য রতন বড়াল সাক্ষ্য দিয়েছেন। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাদের জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবি।
তিনি আরো জানান, আদালত ৫ জন স্বাক্ষীকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিলেও চারজন উপস্থিত হয়েছেল। তবে আদালতে হাজিরা দেওয়া ইসমাইল হোসেন নামে আরেক আনসার সদস্যের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। পরের তারিখে তার স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হতে পারে। এর আগে গত ২৪ তারিখ একই আদালতে স্বাক্ষ্য দেন মামলার বাদি ও ভুক্তভোগী নারী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি রকিবুদ্দিন আরো বলেন, আদালতে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেন। তারা গত ৩ এপ্রিল রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনা জানান। সাক্ষীরা আদালতকে বলেন, “ওইদিন রিসোর্টে বিশৃঙ্খলার পর ওই নারীর কী সম্পর্ক জানতে চাইলে তাকে স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল। তবে এই বিষয়ে বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের সামনেই মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী নারী বিয়ের প্রলোভনে রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে সকলের সামনে ওই কথা স্বীকারও করেন মামুনুল হক।”
উল্লেখ্য, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হক জান্নাত আরা ঝর্ণাকে সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেছেন এমন অভিযোগ তুলে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগি নারী ঝর্ণা। ওই মামলায় ৩ নভেম্বর মামুনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ২৪ নভেম্বর আদালতে স্বাক্ষ্য দেন মামলার বাদি ঝর্ণা।