মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ তাবলীগ জামায়াতের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে লাখো মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছেন। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৫৪টি দেশের ৬ হাজার ৩৬জন বিদেশি মুসল্লি ময়দানে অবস্থান করছেন। বিদেশি মুসল্লিদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বের লাখো মুসল্লিদের অংশগ্রহণে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে জুমার জামাত শুরু হয়। জুমার নামাজে ইমামতি করেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা সা’দের বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্দলভী। কাকরাইল মসজিদের শুরা সদস্য মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলামের ছেলে মুফতি ওসামা ইসলাম ও মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম জানান, ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লি ছাড়াও জুমার নামাজে অংশ নিতে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমাস্থলে হাজির হন। ভোর থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে মানুষের ঢল নামে। দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। ইজতেমা পুরো ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। এছাড়া টঙ্গীর বিভিন্ন উঁচু ভবনের ছাদে থেকেও মুসল্লিরা জুমার নামাজে শরিক হন। বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠের দিকে ছুটে আসেন জুমার নামাজ আদায় করার জন্য। এরমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আলহাজ¦ মো: জাহিদ আহসান রাসেল এমপি ও গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এড. আজমত উল্লা খান, মালয়েশিয়ায় ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ বলে খ্যাত আলোচিত সমাজকর্মী ইবিট লিও ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ব ইজতেমায় প্রতিদিন প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। শুক্রবার বাদ ফজর মাওলানা ইলিয়াস বিন সা’দ সাহেবের আম বয়ানের মধ্যদিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ সাহেব। জুমার নামাজের পরে আরবী ভাষায় বয়ান করবেন শেখ মোফলে, বাংলা তরজমা করবেন মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ মনসুর, বাদ আসর বাংলায় বয়ান করবেন মাওলানা মোশাররফ সাহেব, বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ, বাংলা তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাশেম।
বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ইজতেমার প্রথম পর্ব সম্পন্ন করেছি। দ্বিতীয় পর্ব ভালোভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। ইজতেমার ময়দানে মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা রয়েছে।
বিশ^ ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে শুক্রবার বিকেল বিকেল পর্যন্ত ৪ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার শিবনগর গ্রামের মৃত ইউসুফ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন (৭০), জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানার গোয়ালের গ্রামের ছবির উদ্দিনের ছেলে নবীর উদ্দিন (৬৫), শেরপুর জেলা সদরের মৃত মহেজদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম (৬৫) ও নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার কুতুবপুর গ্রামের মৃতু সুলতানের ছেলে আব্দুল হেলিম (৬২)।