নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় গত দুই মাস ধরে গ্যাস সরবরাহ একেবারেই বন্ধ রয়েছে।
গ্যাসের অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন লক্ষাধিক মানুষ।
তবে নানা অজুহাত ও সমস্যার কথা জানিয়ে অচিরেই স্বাভাবিক নিয়মে গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন তিতাসের উপব্যবস্থাপক।
জেলা সদরের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জালকু্ঁড়ি এলাকার গৃহিনী সোমা বিবি প্রতি মাসে নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করেও গত ছয় মাস ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে গ্যাস পাচ্ছেন না। এর মধ্যে দু’মাস ধরে গ্যাস সরবরাহ একেবারেই বন্ধ রয়েছে।
ফলে লাকড়ি ও ঝুট কিনে মাটির চূলায় রান্না করে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে তাকে। একই অভিযোগ করেছেন পাশের বাড়ির গৃহিনী হাজেরা আলমের।
জালকুঁড়ি ছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জের রব্বানিনগর, ঘোড়ামাড়া, মৌচাক, সানারপাড় এবং ফতুল্লার দেলপাড়া, কুতুবপুর, পাগলা ও নয়ামাটি সহ অন্তত ২০ টি এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ গত দুই মাস ধরে এই গ্যাস সংকটে ভুগছেন।
বাধ্য হয়ে বাড়তি খরচ করে মাটির চূলা, ইটের চূলা ও টিন দিয়ে বানানো চূলায় রান্নাবান্না করছেন এসব এলাকার গৃহিনীরা। আসন্ন ঈদুল আযহার কোরবানির পশুর রান্নাবান্না কিভাবে করবেন এই নিয়ে শংকায় রয়েছেন পরিবারগুলো।
নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে ভুক্তভোগি গ্রাহক ও বাসিন্দারা গত এক মাস ধরে একাধিকবার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, তিতাস অফিসে স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভ সমাবেশ সহ নানা কর্মসূচী পালন করলেও এর কোন সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ঈদের আগে গ্যাস সরবরাহ করতে সরকারের কাছে জোড় দাবি করছেন তারা।
তবে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে একটি এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় জাতীয় সমস্যার কারণে এই গ্যাস সংকটের কথা জানান তিতাসের নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক বিপনন ডিভিশন এর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো: আনিসুর রহমান।
তিনি বলেন, একটা এলএনজি দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তবে আমরা আশা করছি ঈদের আগেই আবাদসিক গ্রাহকদের গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
যেহেতু ঈদের ছুটিতে সকল শিল্প কারখানা বন্ধ থাকবে, তাই এই সেক্টরের বিপুল পরিমান গ্যাস আবাসিক গ্রাহকরা পেয়ে যাবেন। ঈদ এবং কোরবানির পশু রান্নাবান্না নির্বিঘ্নে করতে পারবেন তারা।
তিতাসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ছাড়াও ঈদের ছুটির মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থ এলএনজি টার্মিনালটির মেরামত কাজ শেষ হয়ে যাবে।
দুটোই এক সাথে চালু হয়ে গেলে ঈদের পরেও আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সংকট আর থাকবে না। অচিরেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে বলে আমরা আশাবাদি’।
নারায়ণগঞ্জ তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জেলায় আবাসিক, শিল্প ও বানিজ্যিক সহ সকল পর্যায়ের গ্রাহকদের প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে বর্তমানে ৭ শ’ ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে।